স্বদেশ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর প্রশ্ন ওঠেছে, কিভাবে তা কার্যকর করা হবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইসিসির ওই নির্দেশের পর রোম চুক্তিতে সইকারী দেশগুলোর জন্য তাদের গ্রেফতার করা বাধ্যতামূলক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
রোম চুক্তিতে সই করেছে ১২৪টি দেশ। ফলে এই ১২৪টি দেশ নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করতে বাধ্য। আর গ্রেফতারের পর বিচারের জন্য তাকে হেগে আইসিসির কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
আইসিসির বিধান অনুযায়ী, অনুপস্থিতিতে বিচার হয় না। আবার পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষমতাও আইসিসির নেই। সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে সমর্পণ করার দায়িত্বটি সদস্য দেশগুলোকেই পালন করতে হয়।
এই রায়ের ফলে নেতানিয়াহুর ও গ্যালান্টের সফর কমে যাবে। ঠিক যেমনটি হয়েছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষেত্রে। তার বিরুদ্ধেও আইসিসি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
এছাড়া এই গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রেক্ষাপটে দেশেও সমস্যায় পড়বেন নেতানিয়াহু। তার বিরুদ্ধে দেশে মামলাগুলো চাঙ্গা হতে পারে।
ইসরাইলের বর্তমান সরকার নেতানিয়াহু বা গ্যালান্টকে আদালতের কাছে সোপর্দ না করলেও ভবিষ্যতের কোনো সরকার করতে পারে।
তবে নেতানিয়াহু কিংবা গ্যালান্টকে হাজির করতে না পারলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি একটি নৈতিক জয় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক গুইলিয়া পিনজাউতি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘এই দায়মুক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি অবিশ্বাস্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র পক্ষগুলোর আদালতের সাথে সহযোগিতা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাদের তা করা উচিত। এটি হলো আদালতের সাথে সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ সময়।’
রোম চুক্তিতে সইকারী দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সকল দেশ রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে জর্ডান, তিউনেশিয়া ও ফিলিস্তিন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশ চুক্তিতে সই করেনি। এমনকি তুরস্ক, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশিভাগ দেশ আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি।
আইসিসির প্রাক-বিচার চেম্বার ১-এর ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি দেশ ঘোষণা করেছে, তারা আদালতের রায় সমুন্নত রাখবে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, জর্ডান, বেলজিয়াম ও আয়ারল্যান্ড।
এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে মতামত জানার চেষ্টা করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, তারা নেতানিয়াহুর সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখবে।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই