শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ন

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘কঠোর প্রতিশোধের’ অঙ্গীকার হাসান নাসরাল্লাহর

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘কঠোর প্রতিশোধের’ অঙ্গীকার হাসান নাসরাল্লাহর

স্বদেশ ডেস্ক:

লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপ হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘কঠোর প্রতিশোধ’ গ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন। এক ভাষণে বৃহস্পতিবার তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন, তাদের হাজার হাজার সক্রিয় কর্মীর যোগাযোগ ডিভাইসে বিস্ফোরণ ঘটানোয় শক্তিশালী গোষ্ঠীটি এক ‘নজিরবিহীন’ ধাক্কার মুখে পড়েছে। তারা এই হামলার দায় ইসরাইলের ওপর চাপিয়েছে।

ইসরাইল এই হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এই হামলায় দু’দিনে লেবাননে ৩৭ জন নিহত ও প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হয়েছে। তবে তারা বলেছে, লেবানন ফ্রন্টকে অন্তর্ভুক্ত করে গাজায় তাদের যুদ্ধের লক্ষ্যমাত্রা আরো প্রসারিত করবে।

মঙ্গলবার ও বুধবার একাধিক হামলার পর এক ভাষণে নাসরাল্লাহের কণ্ঠে প্রতিবাদী সুর শোনা যায়। তিনি প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই হামলার ফলে লেবানন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

‘যুদ্ধের ঘোষণা’

হামলাগুলোকে ‘যুদ্ধের সম্ভাব্য পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেছেন, ইসরাইল ‘যেখানে চায় ও যেখানে চায় না সেখানে কঠোর প্রতিশোধ ও ন্যায্য শাস্তির’ মুখে পড়তে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই হামলা একটি ‘হত্যাযজ্ঞ’ যা যুদ্ধাপরাধ বা যুদ্ধের ঘোষণা হতে পারে। তার অভিযোগ, ইসরাইল ‘দুই মিনিটের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে হত্যা’ করতে চেয়েছিল।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহের লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন নাসরাল্লাহ।

তিনি বলেছেন, ‘এত রক্তপাত’ সত্ত্বেও ‘যতদিন না গাজার উপর আগ্রাসন বন্ধ না হয় ততদিন লেবানীয় ফ্রন্ট থামবে না।’

‘উত্তর ইসরাইলের মানুষ ফিরবে না’

লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ফলে বাস্তুচ্যুত হওয়া হাজার হাজার ইসরাইলিকে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে ইসরাইলের কর্মকর্তাদের প্রতিশ্রুতির কথাও উল্লেখ করেছেন নাসরাল্লাহ।

‘উত্তরের মানুষদের উত্তরে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না আপনারা,’ তিনি বলেন। তিনি সতর্ক করেছেন, ‘কোনো সামরিক অভিযান, কোনো হত্যাকাণ্ড, কোনো গুপ্তহত্যা ও কোনো সার্বিক যুদ্ধ বাসিন্দাদের সীমান্তে ফেরাতে পারবে না।’

তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুতদের উত্তরে ফেরানোর ‘একমাত্র পথ’ হলো ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা।’

হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপটি হামাসের মিত্র। হামাস গত বছর ৭ অক্টোবরে ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলা চালায়, যার ফলে গাজা ভূখণ্ডে ভয়াবহতম যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

এখন পর্যন্ত গাজা হচ্ছে ইসরাইলি সামরিক শক্তির লক্ষ্যবস্তু।

তবে, লেবাননের সাথে ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে ৮ অক্টোবরের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও হিজবুল্লাহ সদস্যদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে।

এই সহিংসতায় লেবাননের কয়েক শ’ মানুষ নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই যোদ্ধা এবং ইসরালের তরফে কয়েক ডজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নাসরাল্লাহ যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন বৈরুতের আকাশে ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের ‘সনিক বুম’ শোনা যায়।

নাসরাল্লাহ আক্রমণ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দেন। একাধিক বিশেষজ্ঞ ও ইসরাইলের কয়েকটি মিডিয়া বলেছে, এই হামলায় ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের যুক্ত থাকার সমস্ত চিহ্ন রয়েছে।
সূত্র : ভিওএ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877