নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ১৫ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া মিনু আক্তার (৩৫) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। আজ শুক্রবার সকালে সোনারগাঁও থানাধীন মুনজিলখোলা এলাকায় তার লাশের সন্ধান পায় র্যাব। মিনু আক্তার নামে ওই নারীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ এবং পরে হত্যা করে লাশ গুম করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তার সাবেক স্বামী।
থানায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে র্যাব-১১ অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ হওয়া নারীর সাবেক স্বামী জুনায়েদকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের পরে ঘটনাস্থলে সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক কাজী শমসের উদ্দিন বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুনায়েদ জানায়, ২০১৬ সালে মিনু আক্তারের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয় এবং ২০১৮ সালে তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। এরপর জুনায়েদ গোপনে মিনু আক্তারের সঙ্গে পুনরায় অবৈধভাবে মেলামেশা শুরু করে। গত ২১ মে আনুমানিক রাত তিনটার দিকে মিনুকে ফোন দিয়ে তার ভাড়া বাসায় আসতে বলে জুনায়েদ। এর কিছুক্ষণ পরে মিনু আক্তার তার ভাড়া বাসায় গেলে জুনায়েদ তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এরপর মিনুর কাপড়ের ব্যবসার সুবাদে জুনায়েদ তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। মিনু তা দিতে অস্বীকার করায় জুনায়েদ তাকে চড়-থাপ্পড় মারে এবং এক পর্যায়ে ঘরের মধ্যে থাকা একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এরপর মিনু ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে জুনায়েদ তাকে গলা টিপে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
হত্যার পর ভোর চারটার দিকে মিনুর মরদেহ দড়ি দিয়ে বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরের পাড়ে কচুরিপানার ভেতরে রেখে দেয়। পরের দিন (২২ মে) রাত ১০টার দিকে কচুরিপানা থেকে মিনুর মরদেহ পার্শ্ববর্তী বিলের পানি দিয়ে টানতে টানতে ২০০ মিটার দূরে নির্জন জঙ্গলের মতো একটি জায়গায় নিয়ে বালুর স্তুপের মধ্যে পুঁতে রাখে।
ওই দিন রাতে মিনুর খোঁজে তার মা জুনায়েদের বাসায় গেলে সে সুকৌশলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে তার মা মনোয়ারা বেগম ২৩ মে সোনারগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপরই নিখোঁজ মিনুর সন্ধানে অভিযানে নামে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ মিনুর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় পরে বিষয়টি র্যাবকে অবহিত করা হয়।