শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী: জি এম কাদের

কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী: জি এম কাদের

স্বদেশ ডেস্ক:

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সম্মান করি। কিন্তুতাদের ছেলে-পেলে, তাদের পরের প্রজন্ম কোটা প্রথার বিষয়ে খুব একটা নীতির মধ্যে আসে না। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা বাধা স্বরূপ হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যে সংবিধান আছে, সেই কোটা সিস্টেম ওই সংবিধানের ২৯-এর ১, ২ ও ৩ নং ধারা যদি কেউ দেখেন, এ কোটা সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী। এটা আমার কোনো কথা নয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, বর্তমান সরকার এটা চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সেখানে হাত-পা বাঁধা। এসব ধারা পরিবর্তনের ক্ষমতা এ সংবিধানে দেওয়া হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী এ কোটা প্রথা বৈধ করার কোনো উপায় নেই।’

জি এম কাদের বলেন, ‘২০১০ সালে দায়মুক্তির আইন করা হয়েছিল। দায়মুক্তিতে আওয়ামী লীগ চ্যাম্পিয়ন। বিদ্যুৎখাতে দায়মুক্তি, জ্বালানিখাতে দায়মুক্তির কারণে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। দেশে রিজার্ভেও অবস্থা খারাপ হচ্ছে। যার কারণে আমাদেও গাড়ি চলতে পারছে না, চুলা জ্বলে না। আবার আইন হয়েছে যারা অবৈধ উপায়ে আয় করেছেন, তা দায়মুক্তি দিয়ে সাদা করা যাবে। এগুলো হলো চুরির দায়মুক্তি, অপরাধের দায়মুক্তি। এসব দায়মুক্তি দিয়ে দেশকে নর্দমায় ফেলে দেওয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো নয়, সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছে। জিনিপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, মানুষের আয়-ইনকাম সেভাবে কমছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, মজুরির দাম কমছে। ডলারের সঙ্গে আমাদের টাকার মানের অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। দেশে পর্যাপ্ত ডলার নেই। আমাদের আমাদের বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভও কমে যাচ্ছে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খালি কর্মী বাহিনী যোগালেই সংগঠন শক্তিশালী হবে না। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের রাজনীতি দিতে হবে। জনগণ যেই রাজনীতি চায়, তাদের সেই রাজনীতি দিতে হবে। রাজনীতি করতে হলে কষ্ট করতে হয়, কষ্টের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। যেকোনো সময় যেকোনো বিপদে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই সংগঠন এগিয়ে যাবে। তা না পারলে জাতীয় পার্টি সংগঠণ হবে না। তখন যে সংগঠন হবে, তা হবে অপকর্ম-কুকর্মের সংগঠন।’

গাজীপুর মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় সাগর-সৈকত কনভেনশন সেন্টারে আয়োজন করা হয় জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গাজীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়ার সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের ও মো. জহিরুল ইসলাম জহির, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, গাজীপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্মেলনের সভাটি পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব মো. কামরুজ্জামান মণ্ডল।

জাতীয় পতাকা ও জাপার দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন জি এম কাদের।  সম্মেলনে আব্দুস সাত্তার মিয়াকে জেলা জাপার সভাপতি এবং মো. কামরুজ্জামান মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন তিনি। তাদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জমা দিতে বলা হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877