স্বদেশ ডেস্ক:
ফেনীর সোনাগাজীতে ওপিডি সাপোর্ট প্রোগ্রাম নামে নিবন্ধনহীন একটি এনজিও গ্রাহকদের সঞ্চয়ের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে অফিসের তালা লাগিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গতকাল ১ জুলাই ঋণ দেয়ার কথা ছিল। অথচ সহশ্রাধিক গ্রাহক থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারকরা ২৯ জুন অফিসে তালা ঝুলিয়ে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ করে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা উপায় না দেখে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
এর আগে সোনাগাজী পৌর এলাকার সাত নাম্বার ওয়ার্ডের হাওয়াই রোডের মো: এয়াছিনের বাড়ির নিচ তলায় ভাড়া দুটি রুম নিয়ে ঢাকার নিবন্ধনকৃত বলে প্রতারকেরা ২ মাস আগে একটি অফিস খুলে বসে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা ও এলাকাবাসী জানায়, ঢাকার কাকলী বনানীর মিলি সুপার মার্কেটের বিপরীতে দশ নাম্বার রোডের ৫৬০ নাম্বার বাড়ির এনএস ভবনের দ্বিতীয় তলা প্রধান কার্যালয় ঠিকানা ব্যবহার করে অফিস খুলে বসেন তারা। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেন জসিম উদ্দিন নামে এক লোক। জাঁকজমকপূর্ণ অফিস সাজিয়ে ঋণ দেয়ার নামে গ্রাহকদের প্রলোভন দিয়ে সহশ্রাধিক গ্রাহক থেকে আমানত সংগ্রহ করেন। গত ২ থেকে ৩ মাস যাবৎ সহজ কিস্তিতে ঋণ, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের দায়ীত্ব, মৃত্যুর পর ঋণ মাফ, সঞ্চয়ের ওপর দ্বিগুণ লাভ ও ঘর নির্মাণ করে দেয়াসহ লোভনীয় অফার দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার গ্রাহকদের থেকে আমানত ও সঞ্চয় সংগ্রহ করেন চক্রটি। রিকশাচালক, দিনমজুর, প্রবাসী ও ব্যবসায়ীসহ প্রায় চার শতাধিক গ্রাহক তৈরি করে।
ক্ষতিগ্রস্তরা আরো জানান, সদস্য চরচান্দিয়া গ্রামের আয়েশা আক্তারের কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫৫০, আসমা আক্তারের ৩৯ হাজার ৫০০, সুমি আক্তারের ৩৯ হাজার ৫০০, মো: শাকিলের ৪৫ হাজার ৫৫০, নুর আলমের ১৬ হাজার, বেলায়েত হোসেনের ১৬ হাজার ৫৫০, আকলিমা আক্তারের ১৫ হাজার, টিপু সুলতানের ১৯ হাজার ৫৫০, নুর আলমের ১৬ হাজার ৫৫০, মো: ইসমাঈলের ১৬ হাজার ৫৫০, তামান্নার ২৭ হাজার টাকা ও সুজনের ৫৬ হাজার টাকাসহ অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়েছেন প্রতারকরা।
এদিকে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় অনেকে স্বামীর অজান্তে টাকা রাখায় বেশ কয়েকজন গৃহবধূর সংসার ভাঙার উপক্রম হয়েছে। নিজেদের কষ্টার্জিত টাকা হারিয়ে গ্রাহকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিচার পেতে থানায় গিয়ে ঘুরছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাকরা। দফায় দফায় বন্ধ অফিসটির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করছেন। প্রতারকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) সুদ্বীপ রায় জানান, বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিনে গিয়েও সংস্থার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জসিম উদ্দিন ও তার সহকর্মীদেরকে পাওয়া যায়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলো এবং অফিসটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, মানুষ কেন লোভে পড়ে অনিবন্ধিত এনজিওতে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়, সেটা বুঝতে পারছি না। সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।