স্বদেশ ডেস্ক:
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় আরও দুজনের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- তাজ মোহাম্মদ খান ওরফে হাজী, অন্যজন মো. জামাল হোসেন। দুজনেরই বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। আনারের খুনের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত মো. আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীনের বাড়িও একই এলাকায়।
যে ১০ জনের ব্যাংক হিসাব খোঁজা হবে, তাদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন- মো. আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী সাজি, চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া, তাজ মোহাম্মদ খান ওরফে হাজী ও মো. জামাল হোসেন।
এর মধ্যে তাজ ও জামাল কীভাবে সংসদ সদস্য খুনের ঘটনায় জড়িত, সেটি আদালতে দেওয়া ডিবির আবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। তবে আবেদনে বলা হয়েছে, খুনের ঘটনার তদন্তে ওই দুজনের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে।
ডিবি সূত্র বলছে, তাজ ও জামালের সঙ্গে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম খুনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত মো. আক্তারুজ্জামানের যোগাযোগ ছিল। আক্তারুজ্জামানের সমবয়সী জামাল। এই দুজনের চেয়ে বয়সে কিছুটা বড় তাজ।
আনোয়ারুল আজীম খুন হওয়ার পর গত ২০ মে আক্তারুজ্জামান ঢাকা থেকে প্রথমে দিল্লি যান। সেখান থেকে নেপালের কাঠমান্ডু যান তিনি। এরপর দুবাই হয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে ডিবির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানতে পেরেছে।
ডিবি সূত্র বলছে, সন্দেহভাজন আসামিদের মধ্যে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল সংসদ সদস্য খুন হওয়ার আগে গত ২ মে কলকাতায় যান। তাঁরা দেশে ফিরে আসেন ১৯ মে। দুজনের বর্তমান অবস্থান এখন কোথায়, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুজনের বাড়ি খুলনার ফুলতলায়। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে চিহ্নিত শিমুল ভূঁইয়ার বাড়িও একই এলাকায়।
ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে ডিবির করা আবেদনে সন্দেহভাজন আরেক আসামি হলেন চেলসি চেরি। তিনি এখন পলাতক। গত ২০ জানুয়ারি শিলাস্তি রহমানের (গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের একজন) সঙ্গে তিনি কলকাতায় যান। দুজন ফিরে আসেন ৩০ জানুয়ারি। ওই সময় কলকাতায় ছিলেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম। তখন কলকাতায় অবস্থান করছিলেন আক্তারুজ্জামান ও শিমুল ভূঁইয়াও (গ্রেপ্তার হওয়া আরেক আসামি)।
ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া অন্য পাঁচজনের মধ্যে শিমুল ভূঁইয়া (সৈয়দ আমানুল্লাহ), তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি। বাকি দুজনের মধ্যে ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর নেপালে আটক আছেন মো. সিয়াম হোসেন।
গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদহ–৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, খুনের পর দেহ খণ্ড খণ্ড করে তা গুম করতে সরাসরি ভূমিকা রাখেন নেপালে আটক ভোলার বোরহানউদ্দিনের সিয়াম হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন কলকাতায় আটক ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার। জিহাদের দেওয়া তথ্যে মরদেহের সন্ধানে কলকাতার ভাঙড়ের বাগজোলা খালে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু সেখানে লাশ খণ্ডাংশ না পাওয়ায় সিয়ামকে খুঁজছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দারা।