শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মেয়েকে নিয়ে দেশত্যাগ, জাপানি মায়ের আদালত অবমাননার শুনানি আজ

মেয়েকে নিয়ে দেশত্যাগ, জাপানি মায়ের আদালত অবমাননার শুনানি আজ

স্বদেশ ডেস্ক

আদালতের আদেশ অমান্য করে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা শরীফকে নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন জাপানি মা ডা. এরিকো নাকানো। এতে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশী বাবা ইমরান শরীফ। ওই আবেদনের ওপর আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

ইমরান শরীফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

তবে এরিকোর আইনজীবী জানিয়েছেন, ২১ এপ্রিলের আগেই দেশে ফিরে আসবেন বড় মেয়ে। আদালতে ওইদিন বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। সাথে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম ও ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশী আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। এরপর বনিবনা না হওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। পরবর্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশে এসে রিট করেন এরিকো। তখন সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি করতে বলেন।

২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরীফ আপিল করেন জেলা জজ আদালতে। ১২ জুলাই জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ করে দেন। তারপর তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সে রিভিশন আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।

আদেশে আদালত বলেন, জেসমিন মালিকা শরীফের হেফাজত মায়ের পক্ষে নির্ধারণ করা হবে। তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্যা লায়লা লিনা শরীফের হেফাজত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে।

রায়টি সম্প্রতি প্রকাশ করার পর দুই পক্ষই (বাবা ও মা) পৃথক পৃথক দু’টি আপিল আবেদন করেন। ইমরান শরীফ বড় মেয়েকে তার কাছে ফেরাতে চেয়ে এবং নাকানো এরিকো মেজো মেয়েকে তার কাছে নিতে চেয়ে লিভ ‍টু আপিল আবেদন করেন।

এর মধ্যে ইমরানের আবেদনে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন ছিল। যেখানে বলা হয়েছে, মেয়েকে যেন দেশের বাইরে না নেয়া হয়। ওই আবেদনের ওপর ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত শুনানির জন্য গত ১৫ এপ্রিল ঠিক করে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। কিন্তু এর মধ্যে বড় মেয়েকে নিয়ে মা নাকানো এরিকো জাপানে চলে গেছেন।

ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে। আজ আদালত অবমাননার আবেদন ও লিভ টু আপিলের ওপর করা পৃথক দু’টি আবেদনও শুনানি হবে।

তবে আইনজীবী মো: শিশির মনির জানান, গত ৯ এপ্রিল দুপুর ১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এ আদেশ হওয়ার পূর্বেই বেলা ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন।

শিশির মনির বলেন, হাইকোর্টের রায়ের কোথাও বলা নাই যে, বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। তবে ২১ এপ্রিল আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এর আগেই বাংলাদেশে ফিরে আসবেন জাপানি মা ও তার সন্তান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877