বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন

নৈরাজ্য চলতে থাকলে দেশে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য: নুর

নৈরাজ্য চলতে থাকলে দেশে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য: নুর

স্বদেশ ডেস্ক

দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, সড়কে মৃত্যুর মিছিল, ব্যাংকিং খাতের লুটপাটসহ চলমান নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘ব্যাংকি খাতের লুটপাটের সঙ্গে সরকারের এমপি, মন্ত্রী, সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত। ব্যাঙের ছাতার মতো ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। লুটপাটের জন্য একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে পরিচালনা পর্ষদে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জনগণ টের পাচ্ছে না, সরকার ব্যাংকগুলো ফাঁকা করে ফেলেছে। সরকারি দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নামে বেনামে শত শত কোটি টাকা লোন নিচ্ছে। এমনকি কিস্তি পরিশোধ না করে সেটাও লোন করে নিচ্ছে। এভাবে ব্যাংকগুলো লুট করছে। এই টাকা বিদেশে পাচার করছে। এ কারণেই ডলার সংকট তৈরি হচ্ছে, লুটপাটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।’

নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি কেএনএফ এই সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা সৃষ্টি করেছে। সরকার বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করেছে। এসবের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে, ফলে ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে কেএনএফকে সরকার কিছু করতে পারবে না। এই নাথান বোম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় পড়েছে, ছাত্র থাকা অবস্থায় কারা তাকে সহযোগিতা করেছে, কারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সেটা চিন্তা করুন। ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নাই, তাহলে ঈদের মধ্যে কীভাবে ইসরায়েলের বিমান বাংলাদেশে এলো? সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এভাবে নৈরাজ্য চলতে থাকলে জনগণ হাতে অস্ত্র তুলে নেবে, গৃহযুদ্ধ অনিবার্য।’

নিজের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে নুরুল হক বলেন, ‘এসব গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আমরা ভীত নই, এই সরকারের আমলে বিরোধীদলের নেতাদের নামে এমন শত শত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। জাতীয় নির্বাচনের পর এখন স্থানীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করছে। জাতীয় নির্বাচনের মতো বিরোধী দলগুলো স্থানীয় নির্বাচনও বর্জন করছে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করব ফ্যাসিবাদের সমর্থনে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবেন না, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।’

নুর বলেন, ‘ভারত খেদাও আন্দোলন দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগ জানে ভারত খেদাও আন্দোলন মানেই ভারতীয় মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগ খেদাও আন্দোলন। তাই এখন এই আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের সরকার হয়রানি করছে।’

দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘এ দেশের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে হবে। এখন আর আমেরিকা- ইউরোপ কিংবা ভারত-চীনের দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। কেউ আমাদের কিছু করে দিবে না। যা কিছু করতে হয়, এ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে। এর আগে, বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, এমন ছাত্র-যুব নেতৃত্ব চাই, যারা পুলিশের হুইসেল বা সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শুনলে পালিয়ে যাবে না।

রাশেদ খাঁন বলেন, ‘২৮ অক্টোবর মোটামুটি ১০ লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছিল, তাদের যথাযথ নির্দেশনা দিতে পারলে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওই দিন গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হতো। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, কিন্তু তিনি আজকে প্রোগ্রামে এসেছেন। গ্রেপ্তার যদি হতেই হয়, রাজপথে থেকে গ্রেপ্তার হতে হবে। ঘরে পালিয়ে থেকে গ্রেপ্তার হয়ে রাজনীতি হয় না। নেতারা সাহস করে রাজপথে থাকলে কর্মীরা নেতাদের জন্য জীবন দিয়ে দেয়।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। দেখেন ভারতে লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে আর বাংলাদেশের ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন। কেন? কারণ এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপির নেতারা বক্তব্য দিবে, মুসলমান হটাও, বাংলাদেশে মুসল্লিরা মন্দিরে হামলা করেছে। বিজেপির নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষাপট তৈরি করতেই, পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভারতের এই তাবেদার সরকারের বিরুদ্ধে এবং ভারতীয় আগ্রসনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জন শুরু করেছে। নুরুল হক নুর রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এই পণ্য বর্জনের ক্যাম্পেইনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যে কারণে ভারতীয় মদদে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আর আমরা যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি, সেই ক্ষোভও সরকারের আছে। তবে হামলা মামলা গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো যাবে না।’

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আর বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, আব্দুজ জাহের, সহসভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সহসভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877