রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

রুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অনুমোদন

রুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার অনুমোদন

স্বদেশ ডেস্ক

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) অবৈধ পন্থায় নিয়োগ দেওয়া ১৩৫ জনের মধ্যে ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাই রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনের নামে মামলার অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম অনুসন্ধান শুরু করেন। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত জানুয়ারিতে মামলা করার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়। এরপর দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ থেকে তাদের নামে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

আজ রবিবার দুদকের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হুদার সই করা এক চিঠিতে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালককে এই অনুমোদনের বিষয়টি জানানো হয়।

এ বিষয়ে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অনুসন্ধান শেষে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম সেখ ও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের মঞ্জুরি পাওয়া গেছে। দ্রুতই তিনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন। ১৩৫ জনের নিয়োগে কমবেশি অনিয়ম হয়েছে। এরমধ্যে ১৭ জনের নিয়োগ নিয়ে দুদক মামলা করবে।’

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই চার বছরের জন্য রুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি ১৩৫ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেন। ২০২১ সালের ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২তম সিন্ডিকেট সভায় এসব নিয়োগ অনুমোদন ও বৈধ করা হয়। তবে এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিধি-বিধান লঙ্ঘন করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে সাবেক উপাচার্য নিজের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকেও নিয়োগ দেন। যারা নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যই ছিলেন না। এসব নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসিতে অভিযোগ হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির একটি তদন্ত কমিটি নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগগুলি তদন্ত করেন। তদন্তে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা মিলে। ইউজিসি থেকে তদন্ত প্রতিবেদন অধিকতর তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে রুয়েটে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ১৩৫ জনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। যদিও এসব নিয়োগ অদ্যাবধি বাতিল হয়নি।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৩৫ জনের নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির যে অভিযোগ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৩ জন শিক্ষকসহ ১১৮ জন নিয়োগের বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ রুয়েটের বিধি-বিধান অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগসহ কতিপয় নিয়োগে সংক্রান্ত বিষয়টি ফৌজদারি কার্যবিধিতে নেওয়া হয়নি। তবে এই ১৩৫ জনের মধ্যে মোট ১৭ জনের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। এই ১৭ জনের মধ্যে সাবেক উপাচার্যের আত্মীয় স্বজন রয়েছেন। যাদের কেউ কেউ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও তাদের মৌখিক পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হয়। তাদের সকলকেই নিয়োগ দেওয়া হয় অবৈধভাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ বলেন, ‘দুদকের মামলার বিষয়ে কিছু জানা নেই। আর নিয়োগে কোনো অনিয়মও হয়নি। তবে মামলা হলে আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877