শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
গাজা যুদ্ধের প্রভাবে ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ডস-স্টারবাকসের ধ্বস

গাজা যুদ্ধের প্রভাবে ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ডস-স্টারবাকসের ধ্বস

স্বদেশ ডেস্ক

গাজায় ইসরাইলের অভিযানের কারণে অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ায়ও পশ্চিমা ফাস্ট-ফুড ব্র্যান্ডগুলো বয়কট আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। এতে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছে ম্যাকডোনাল্ডস, স্টারবাকস ও ইউনিলিভারসহ পশ্চিমা ফাস্ট-ফুড ব্র্যান্ডগুলো।

বুধবার (২০) মার্চ কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশিষ্ট এক ব্যবসায়ী কেলানা প্রতি বছরই তার পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে নানা রেস্টুরেন্টে ইফতার পার্টি করে থাকে। এই তালিকায় নিয়মিত পশ্চিমা ফাস্ট-ফুড ব্র্যান্ডগুলো থাকতো। কিন্তু এবার তিনি সেসবকে এড়িয়ে চলছেন।

ম্যাকডোনাল্ডস সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেছে যে তারা গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীকে হাজার হাজার প্যাকেট খাবার বিনামূল্যে দান করেছে। এ ঘোষণার পর থেকেই কেলানা ওই ফাস্ট ফুড ব্রান্ডটি এড়িয়ে চলেন। আল জাজিরাকে কেলানা বলেছেন, ‘এটি এতটা সরাসরি বয়কট নয়। বরং ইসরাইলের প্রতি গভীরভাবে অসন্তুষ্ট হওয়ার অনুভূতি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার গাড়িতে একটি ম্যাকডোনাল্ডের স্টিকার থাকত যা আমি ড্রাইভ-থ্রু ব্যবহার করার সময় আমাকে ছাড় দিতো। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে আমি তা ছিঁড়ে ফেলেছিলাম। আমি যদি ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করতে গাজায় যেতে পারতাম, আমি তাই করতাম। ইসরাইলিদের হাতে প্রতিদিনই মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। যেহেতু আমি সেখানে ব্যক্তিগতভাবে যেতে পারি না, পরবর্তী সেরা জিনিসটি হল ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত পণ্যগুলো ব্যবহার না করে আমার সমর্থন দেখানো।’

তিনি জানান, আমি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগদান করেছিলেন। সেখানে নিয়মিত বয়কটযোগ্য পণ্যগুলোর আপডেট তালিকা পোস্ট করা হতো। তিনি ফরাসি সংস্থা ড্যানোনের বোতলজাত পানি পান করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ, তারা বেশ কয়েকটি ইসরাইলি কোম্পানি এবং স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে বলে রিপোর্ট বেরিয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে ইসরাইলের সাথে যুক্ত রয়েছে বলে মনে করা পণ্যগুলো বয়কট করার আহ্বান প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর উপর লক্ষণীয় প্রভাব ফেলছে। ফেব্রুয়ারিতে ম্যাকডোনাল্ডস বলেছিল, যুদ্ধের প্রভাব তাদের উপরও পড়েছে। কারণ ২০২৩ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে আন্তর্জাতিক বিক্রয় মাত্র ০.৭ শতাংশ বেড়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের মধ্যে ১৬.৫ শতাংশ সম্প্রসারণের থেকে তীব্রভাবে কমেছে।

ম্যাকডোনাল্ডের সিইও ক্রিস কেম্পজিনস্কি বলেছেন, ‘সবচেয়ে স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম দেশগুলোতে। যতদিন এ সংঘাত, এ যুদ্ধ চলছে…আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পারব না।’

এছাড়া বয়কটে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রান্ডের তালিকায় রয়েছে ইউনিলিভার এবং কফি চেইন স্টারবাকস। ইউনিলিভার, যারা ডাভ সাবান, বেন অ্যান্ড জেরির আইসক্রিম এবং নর স্টক কিউব উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারিতে বলেছিল যে ইন্দোনেশিয়ায় গত বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ‘ভূ-রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্রীভূত, ভোক্তা-মুখী প্রচারণার’ ফলস্বরূপ বিক্রি অনেক কমে গিয়েছে।

সউদী আরব, ওমান, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ম্যাকডোনাল্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। গাজায় ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তার জন্য অর্থের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউনিলিভার ইন্দোনেশিয়া নভেম্বরে বলেছিল যে তারা সংঘর্ষের জন্য ‘দুঃখিত এবং উদ্বিগ্ন’ এবং তাদের পণ্যগুলো ‘ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা তৈরি, বিতরণ এবং বিক্রি করছে’।

স্টারবাকস ইন্দোনেশিয়া ব্র্যান্ডের অন্যান্য আন্তর্জাতিক শাখার মতো একটি স্থানীয় কোম্পানি, পিটি সারি কফি ইন্দোনেশিয়ার মালিকানাধীন। গারব্যাঙ আলাফ রেস্টুরেন্টের মালিকানাধীন ম্যাকডোনাল্ডস মালয়েশিয়া গত বছর গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের সাথে তাদেরকে ভিত্তিহীনভাবে জড়িয়ে ব্যবসার ক্ষতি করার অভিযোগ এনে বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট এবং নিষেধাজ্ঞা (বিডিএস) মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে।

সূত্র : আল-জাজিরা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877