রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

গাজায় বন্দর নির্মাণ নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা!

গাজায় বন্দর নির্মাণ নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা!

স্বদেশ ডেস্ক:

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ করার কথা বলে সেখানকার উপকূলে যে বন্দর নির্মাণ করার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন, তা আসলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে। এমনকি গাজা যুদ্ধের নির্মমতা নিয়ে নেতানিয়াহুর সাথে বাইডেনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে যে কথা প্রচার করা হয়েছে, তা আসলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী কৌশল মাত্র। এক সিনিয়র কূটনৈতিক সূত্র রোববার রাতে জেরুসালেম পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্রটি জানায়, ‘নেতানিয়াহু বাইডেন প্রশাসনের সহযোগিতায় গাজা উপত্যকার বেসামরিক লোকজনের জন্য একটি সমুদ্র মানবিক সহায়তাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।’

সূত্রটি জানায়, যুদ্ধ শুরুর দুই সপ্তাহ পর ২২ অক্টোবর সাইপ্রাসে ইসরাইলি পরীক্ষার পর সমুদ্রপথে গাজায় সহায়তা পাঠানোর ধারণাটি নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে আলোচনা করেন নেতানিয়াহু।

সূত্রটি জানায়, ৩১ অক্টোবর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের কাছে এই কৌশলের রূপরেখা প্রকাশ করেন।

সূত্রটি আরো জানায়, এরপর ১৯ জানুয়ারি নেতানিয়াহু এবং বাইডেনের মধ্যকার আলোচনার সময় প্রস্তাবটি নিয়ে আবার আলোচনা হয়। এসময় নেতানিয়াহু প্রস্তাব করেন যে ‘আমি সাইপ্রাসের মাধ্যমে (সকল পণ্য পরীক্ষার পর) সমুদ্রপথে পাঠানোর বিষয়টি যাচাই করতে চাই।’

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে ঘনিষ্ঠ এই সূত্র জানায়, বাইডেন প্রশাসন আসলে নেতানিয়াহুর একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এখানে নতুন কিছুই করা হচ্ছে না।

বাইডেন ও নেতানিয়াহুর মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সূত্রটি জেরুসালেম পোস্টকে এই তথ্য জানায়। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সাথে নিজের দূরত্ব তৈরী হয়েছে বলে প্রচার করছেন বাইডেন।

বাইডেন গত বৃহস্পতিবার কংগ্রেসে দেয়া তার স্টেট অব দি ইউনিয়ন ভাষণে ঘোষণা করেন যে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদান করার জন্য গাজা উপকূলে জরুরিভিত্তিতে অস্থায়ী একটি বন্দর নির্মাণ করা হবে।

তিনি তার বক্তৃতায় গাজায় দুর্ভিক্ষের কথা উল্লেখ করে হামাসকে ধ্বংস করার ইসরাইলি সামরিক অভিযানের সময় ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা লাঘবে মার্কিন প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন।

গাজায় বন্দর নির্মাণের এই পরিকল্পনা নেতানিয়াহুর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বীতরাগের প্রতিফলন হিসেবেও তুলে ধরা হয়েছিল। বক্তৃতায় বাইডেন আরো বলেছিলেন যে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সহায়তার জন্য ইসরাইলের আরো বেশি কিছু করা উচিত।

গাজা যুদ্ধের অনেক আগে ইসরাইলের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ একটি ভাসমান দ্বীপের সহায়তায় সাইপ্রাসের মাধ্যমে সমুদ্ররুট নির্মাণের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

এই প্রকল্পটি কখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তবে ৭ অক্টোবরের পর তিনি এটি আবার উত্থাপন করেন।

গাজার সাথে সমুদ্ররুট চালুর পথে অন্যতম একটি জটিল বিষয় হলো গাজায় বড় মালবাহী জাহাজ ভেড়ার মতো কোনো বন্দর নেই।

গাজায় অস্থঅয়ী বন্দর নির্মাণ করার বাইডেনের পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানিয়েছে ইসরাইল।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, নৌ-কমান্ডার সামরিক সচিব প্রমুখদেরকে রোববার নৌবন্দর নির্মাণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের কাছে ত্রাণ সরবরাহ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877