স্বদেশ ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের বাসাইলে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় জিজান হাসান দীপ্ত (১৮) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৬টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। বাসাইল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রিন্স মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাউন্সিলর প্রিন্স মাহমুদ বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়ে কলেজ ছাত্র জিজান হাসান দীপ্ত ২৪ জানুয়ারি থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হামলার ৯ দিন পর আজ ভোরে মৃত্যুবরণ করে দীপ্ত।’
এদিকে, কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা শাকিল আহাম্মেদ ওরফে টিকটক শাকিলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত দীপ্ত সখীপুর উপজেলার চাকদহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মল্লিকের ছেলে। ঢাকায় বিজিবি পিলখানায় অবস্থিত বীর শ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় জিজান হাসান দীপ্তর মা সোহেলী সুলতানা দিপা বাদি হয়ে ২৭ জানুয়ারি বাসাইল থানায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান বাসাইল থানাপাড়ার হোসেন আলীর ছেলে শাকিল আহাম্মেদসহ (২৫) ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩/৪জন অজ্ঞাত যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ ঘটনার মূলহোতা শাকিল ও তার সহযোগী অনিক এবং আসাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি রাম দা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এরপর শাকিল ও অনিকের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনেও মামলা হয়েছে। বর্তমানে তারা তিনজন কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, জিজান হাসান দীপ্ত গত ২৩ জানুয়ারি বাসাইল দক্ষিণপাড়া এলাকায় তার নানা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরে ২৪ জানুয়ারি দুপুরে সমবয়সী বাসাইল উত্তরপাড়ার নাঈম ও সজল খানের সঙ্গে বাসাইল বাজারে যান দীপ্ত। সেখান থেকে নাঈমকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান শাকিল বাসাইল বাজারের একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। এসময় দীপ্ত ও সজল উপস্থিত ছিলেন। পরদিন সন্ধ্যায় তারা তিনজনে মিলে বাসাইল বাজারের দিকে যাওয়ার সময় শাকিলের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে নাঈম ও সজল দৌড়ে পালিয়ে গেলেও দীপ্তকে ধারালো দা, কাঠের স্ট্যাম্পসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে শাকিলসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। দীপ্তকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেদিন থেকেই ঢাকার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন দীপ্ত।
মামলার আইও বাসাইল থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটি সকালে মারা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে মূলহোতা শাকিল ও অনিককে রিমান্ডে আনার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’