বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

শতকোটি টাকার মালিক ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা!

শতকোটি টাকার মালিক ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা!

স্বদেশ ডেস্ক:

* ক্ষমতা অপব্যহার করে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ

* অনুসন্ধানে দুদক

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় শতকোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজের ও স্ত্রীর নামে চট্টগ্রামে একাধিক ভবন, শত একর জমি, মার্কেট, দোকানের মালিকানা ছাড়াও স্ত্রী, ভাই ও শ্যালকের নামে-বেনামে সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কুমিল্লায় ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে গত বছর দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এ অনুসন্ধান শুরু হয়। সম্প্রতি অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান রুবেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

দুদকে আসা অভিযোগে জসিম উদ্দীনের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে বলা হয়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের স্টেশন কলেজ রোডে কালীমন্দিরের সামনে গড়ে ওঠা বদিউল আলম নিউ মার্কেট, সীতাকুণ্ডের মধ্যম মহাদেবপুরে (কলেজ রোড) ছয়তলা ভবন এবং সীতাকুণ্ড মধ্যম মহাদেবপুর চৌধুরীপাড়া এলাকায় তার নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবন রয়েছে।

অন্যদিকে জসিম উদ্দীনের স্ত্রী পারভীন আক্তারের নামে সীতাকুণ্ডের চৌধুরীপাড়ায় ছয়তলা ভবন, কলেজ রোডে এসপি মার্কেট, স্ত্রীর নামে এক হাজার শতাংশ জমি ও ২ শতাংশ জমিতে দোকান থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া জসিম উদ্দীনের বড় ভাইয়ের নামে সীতাকুণ্ডের চৌধুরীপাড়ার পূর্ব পার্শ্বে ২৪ শতাংশ জমি ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের ভেতরে বড় ভাইয়ের ছেলের নামে একটি কারখানা রয়েছে। জসিম উদ্দীনের শ্যালক মো. সেলিমের নামে তিনটি খতিয়ানে ১ হাজার ৩০০ শতাংশ জমি এবং দুটি মাইক্রো ও দুটি প্রাইভেট কারের মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

দুদকের এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, অভিযোগ অসুন্ধানের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ডের সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, ভূমি অফিস, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সরকারি-বেসরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব নথিপত্র যাচাই করছে অনুসন্ধান টিম।

ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি অনুসন্ধান পর্যায়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিভেন্স অধিদপ্তরের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জসিম উদ্দীনকে একাধিকবার ফোন এবং এসএমএস পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

অভিযোগে বলা হয়, জসিম উদ্দীন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা হলেও তার পৈতৃক এলাকা সন্দ্বীপে। ২০১৩ সালে ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসের ঘটনার পর গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কল-কারখানায় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সরকারি নিয়ম-নীতি কঠোর করা হলে জসিম উদ্দীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদ বানান।

অভিযোগ অনুযায়ী, চট্টগ্রামে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নিরাপত্তার লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন করা এবং অগ্নি নিরাপত্তার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে বাধ্য করাতেন তিনি। মূলত এসব কাজের মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ গড়েছেন তিনি। তবে অবৈধ আয় দিয়ে জসিম উদ্দীন নিজের নামে সম্পত্তি কম রেখে অধিকাংশ সম্পত্তি স্ত্রী, শ্যালক ও ভাইয়ের মেয়েসহ নিকট আত্মীয়স্বজনের নামে করেছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877