স্বদেশ ডেস্ক:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর দিন হরতাল, ঘেরাও কিংবা বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি দেবে বিএনপি। গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আগামী ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার কথা রয়েছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই দিন কর্মসূচি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন বয়কট করা দলটি। সেদিন এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পর মাঠের কর্মসূচিতে ফিরতে চায় তারা।
এদিকে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী পালনে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের নেতারা মনে করছেন, জিয়াউর রহমানের জন্মদিনের কর্মসূচির মাধ্যমে বর্তমানে বিপর্যস্ত রাজনৈতিক অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পাবে বিএনপি।
গত ৭ জানুয়ারি একতরফা ও পাতানো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। দলটি আগের সংসদের মতো এই সংসদকেও ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়েছে।
বিএনপি ও যুগপতের মিত্ররা এক বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করলেও চূড়ান্ত সফলতা পায়নি। বরং তাদের আন্দোলনের মুখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এমন প্রেক্ষাপটে এখন নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলনের সফলতা ও ব্যর্থতা মূল্যায়ন করছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে স্থায়ী কমিটির এই ভার্চুয়াল বৈঠক হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি এখন ধীরে ধীরে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাঠের আন্দোলনে ফিরতে চায়। এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। কেউ কেউ ঢাকায় দ্রুততম সময়ে সমাবেশ করার পরামর্শও দেন। তাদের মত ছিল, সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা আবার একত্র হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তবে অন্য নেতাদের মতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতাকর্মীরা এখনো সবাই আদালত থেকে জামিন পায়নি। এমন অবস্থায় সমাবেশ দিলে সেটিকে ঘিরে ফের গ্রেফতার অভিযান শুরু হতে পারে। এ জন্য নেতাকর্মীদের জামিন হওয়া পর্যন্ত বড় ধরনের সমাবেশে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন তারা। গত রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠক করে তাদের মতামতও নেয় বিএনপির হাইকমান্ড।
জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্রুতই সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। তবে জোরালো কর্মসূচি দেয়ার সম্ভাবনা কম। মাঝে মাঝে ইস্যুভিত্তিক হরতাল দেয়া হলেও ধারাবাহিক বড় কর্মসূচি দেবে না দলটি। বরং এখন জনসম্পৃক্ত কর্মসূচির ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে যুগপৎভাবে কিছু কর্মসূচি থাকতে পারে। কর্মসূচিসহ পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে ইতোমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের সাথে যুক্ত শরিক দলগুলোর সাথে একদফা আলোচনা করেছে বিএনপি।
সর্বশেষ গত শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে দলটির হাইকমান্ডের বৈঠক হয়। আজ-কালের মধ্যে আবার শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করতে পারে বিএনপি।