স্বদেশ ডেস্ক:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় ঝড় তুললেও ভোটের ফলাফলে প্রায় শূন্য চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। আজ রবিবার ভোট গ্রহণের পর রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের ১৭টি কেন্দ্রের ফল এসে পৌঁছে রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে। এতে দেখা যাচ্ছে, এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকায় সিনেমার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিসহ চার প্রার্থী একটি ভোটও পাননি। ভোট না পাওয়া বাকি তিন প্রার্থী হলেন তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু (সোনালী আঁশ), বিএনএমের প্রার্থী মো. শামসুজ্জোহার (নোঙ্গর) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শামসুদ্দিন (লাঙ্গল)।
এই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) ওমর ফারুক চৌধুরী ১৭ কেন্দ্রে ৯ হাজার ৪১৬, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানী কাঁচি প্রতীকে ৫ হাজার ৮৭৫, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহধর্মিণী আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া বেলুন প্রতীকে ৩১২, এনপিপির প্রার্থী নুরুন্নেসা আম প্রতীকে ৩৫, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ ছড়ি প্রতীকে ২৭ ও বিএনএফের প্রার্থী মো. আল সাআদ টেলিভিশন প্রতীকে ৮৬ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে গোলাম রব্বানীকে সমর্থন দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামানের ঈগল প্রতীকে পড়েছে ৮৬ ভোট।
ভোটের এই ফল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বড় পর্দায় দেখানো হয়েছে। রাজশাহী-১ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্য কেন্দ্রগুলোর ফল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেনি।
এদিকে ভোট চলাকালে মাহিয়া মাহি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ফলাফল যা হওয়ার হবে, আমি হারি আর জিতি ইনশাআল্লাহ কালকে (সোমবার) পুরো এলাকায় একটা শোডাউন দেব। হেরে গেলেও সবাইকে জানান দেব, আমি তাদের সঙ্গে আছি। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ চলছে। প্রশাসন খুবই অ্যাকটিভ। সুন্দর করে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হচ্ছে।’
আজ সকাল ১০টার দিকে তানোর উপজেলার ম্রুমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। মাহি আসনটি থেকে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
প্রত্যেকটি কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ার বিষয়ে মাহিয়া মাহি বলেন, সব কেন্দ্রেই এজেন্ট দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় কেউ (এজেন্ট) একটু লেট করেছে। কিছু কিছু জায়গায় এজেন্টরা সাক্ষর করে ঢুকতে লেট করেছে। তবে সব কেন্দ্রেই আমার লোকজন আছে। এটা আমার প্রথম নির্বাচন। আপনারা সবাই জানেন, অন্যদের মতো আমি একদম পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ না। অনেকেই আমার বয়সের আগে থেকে রাজনীতির সাথে যুক্ত। তাদের কার্যক্রম যতটা মসৃণ হবে, সেখানে আমার তো একটু ঘাটতি থাকবেই। তবে ওভারঅল সবকিছু ভালোই আছে।
পাসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পাস করি, আর ফেল করি এখন এটা আমার কাছে বড় বিষয় না। তবে আমি মানুষের এত কাছাকাছি গিয়েছি, এত বয়স্ক মানুষের দোয়া পেয়েছি যা বলার মতো না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি এবং অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষের কষ্টের কথাগুলো শুনেছি। এর থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তাদের জন্য আমার অনেক করণীয় আছে। আমি যদি সুপ্রিম পাওয়ার পাই, তাহলে বৃহৎ পরিসরে তাদের সহযোগিতা করতে পারব। আর না পেলেও আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাদের সহযোগিতা করব’।
মাহিয়া মাহি বলেন, ‘একটা বিষয় শেখার আছে। পাঁচ বছর জনগণের কাছাকাছি গেলে, তাদের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে না। আমি মনে করি আপনি যদি ৫ বছর সময় পান তাহলে সেটি যথেষ্ট। প্রত্যেকটা জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা সম্ভব। আমি যেহেতু প্রচারণার সময়টা কম পেয়েছি, এর মধ্যেও যথেষ্ট মানুষের কাছে গিয়েছি। ভোটকেন্দ্রগুলোতে তুলনামূলক নারীদের উপস্থিতি বেশি। ভোট দিতে আসার জন্য নারীদের একটা উচ্ছাস কাজ করছে।’