বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১১:০৭ অপরাহ্ন

ভারতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে আট মিটার দূরে উদ্ধারকারীরা

ভারতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে আট মিটার দূরে উদ্ধারকারীরা

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীর নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের শিগগিরই উদ্ধার সম্ভব হতে পারে। টানা ১২ দিন আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে আজ বৃহস্পতিবার গভীর রাত কিংবা আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে উদ্ধার করা যাবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অগার ড্রিলিং মেশিনের কাজে গতকাল বুধবার নতুনভাবে বাধা সৃষ্টি করে ধসের মধ্যে থাকা এক লোহার জাল। ফলে খননের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেই বাধা কাটিয়ে নতুন করে শুরু হয় খননকাজ।

উত্তরাখন্ড সরকারের পর্যটন বিভাগের বিশেষ আধিকারিক ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সাবেক উপদেষ্টা ভাস্কর খুলবে আজ দুপুরে বলেন, ওই বাধার কারণে ছয় ঘণ্টার মতো সময় নষ্ট হয়েছে। এখন খোঁড়াখুঁড়ি বাকি আর মাত্র আট মিটার। উদ্ধারপর্ব শেষ হতে আর কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে। আশা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতেই বা শুক্রবার কাজ শেষ হবে।

ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার পাশাপাশি পাতা হচ্ছে কংক্রিটের তৈরি একটা বড় পাইপ। সেই পাইপ আটকে পড়া শ্রমিকদের জায়গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। ওই পাইপের মধ্যে ওয়েল্ডিং করে ঢোকানো হবে আরেকটি পাইপ। তার মধ্য দিয়ে শ্রমিকেরা হয় একে একে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসবেন, নতুবা তাঁদের চাকা লাগানো স্ট্রেচারে শুইয়ে দড়ি দিয়ে টেনে বের করা হবে। সেই কাজে তাঁদের সহায়তা করবেন দেশের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) জওয়ানেরা।

এনডিআরএফের মহাপরিচালক অতুল কারওয়াল বলেছেন, তাঁরা উদ্ধারকাজ শুরু করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।

এনডিআরএফ জওয়ানদের একটি দল প্রথমে ওই পাইপ দিয়ে সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে যাবেন। সেই দলে থাকবেন কয়েকজন চিকিৎসক। তাঁরা প্রথমেই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। তারপর তাঁদের শেখানো হবে, কীভাবে নিজেকে অক্ষত রেখে ওই পাইপের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একজন একজন করে এভাবে শ্রমিকদের বের করে আনতে তিন–চার ঘণ্টা লেগে যেতে পারে। ওয়েল্ডিংয়ের জন্য দিল্লি থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দক্ষ ওয়েল্ডারদের।

পাইপে যেখানে যেখানে ওয়েল্ডিং করা হচ্ছে, সেসব জায়গায় কিছুটা ধারালো থাকবে। শ্রমিকদের সেটা ভালো করে বুঝিয়ে দেবেন বিপর্যয় মোকাবিলা জওয়ানেরা। মুক্ত আকাশে ফেরার উত্তেজনায় তাঁদের শরীর যাতে ক্ষতবিক্ষত না হয়, সেদিকে উদ্ধারকারীরা বিশেষ নজর রাখছেন।

সুড়ঙ্গমুখে গতকাল বুধবারই আনা হয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স। কাছেই গড়ে তোলা হয়েছে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল। সেখানে ৪১টি ‘শয্যা’ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রত্যেক শ্রমিককে প্রথমে ওই অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বড় হাসপাতালে তাঁদের স্থানান্তর করা হবে। শ্রমিকদের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি দেওয়া হবে মানসিক চিকিৎসাও।

চিকিৎসকেরা বলছেন, উত্তরকাশীতে এখন রীতিমতো ঠান্ডা পড়ে গেছে। সুড়ঙ্গের অভ্যন্তরের তাপমাত্রার সঙ্গে বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্য প্রচুর। চিকিৎসকেরা ও উদ্ধারকারী দল সেদিকেও বিশেষ নজর রাখছেন। চিকিৎসকদের সম্মতি পেলেই শ্রমিকদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।

সুড়ঙ্গধসের ফলে সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। দেশের বিভিন্ন অংশে এই মুহূর্তে ২৯টি সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এনএইচএআই) নিরাপত্তাব্যবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সড়ক ও হাইওয়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877