স্বদেশ ডেস্ক:
বিএনপির দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের কী হলো সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়েও লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন, ভয় দেখান মির্জা ফখরুল। বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের কী হলো? ফলাফল কী?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বঙ্গবন্ধু এ দেশ স্বাধীন করতে পারতেন না। নিষেধাজ্ঞাকে কেউ ভয় করলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের সোনালী অর্জন সেগুলো হতো না। আমাদের নির্বাচন সংবিধান নির্ধারণ করবে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক মানি না। তত্ত্বাবধায়ক এখন মরা লাশ, ওই লাশ এখন আমাদের দিয়ে লাভ নেই। বাংলাদেশে ওই তত্ত্বাবধায়কের ইতিহাস জানা আছে।’
তিনি বলেন, ‘১৫ বছর আগের বাংলাদেশ, ১৫ বছর পরে বাংলাদেশ, ১৫ বছর আগের এই ঢাকা শহর, ১৫ বছর পরের এই ঢাকা শহর, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আলোতে ঝলমল। কী পরিবর্তন তাকিয়ে দেখুন। আগামী মাসে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে। কী অপূর্ব সুন্দর ঢাকা শহর। এই রূপান্তরের রূপকার কে? সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিয়েছে কে? আমাদের সাহস, আমাদের স্বপ্নের বর্ণিল ঠিকানা কে? তিনি শেখ হাসিনা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ৪৮ বছরে তিনি বাংলাদেশের সেরা নেতা। তার তুলনা কারও সঙ্গে চলে না। তিনি বাংলাদেশকে নবরূপে বিশ্বের বুকে উপস্থাপন করেছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আজকেই বলেছেন তাদের গণতন্ত্র হুমকির মুখে। তারা ট্রাম্পকে সামলাতে পারে না, আবার বাংলাদেশকে ধমক দেয়। বেপরোয়া ট্রাম্পকে ঠেকাতে আমেরিকা সরকার ব্যর্থ। এমনকি জনমত জরিপেও ট্রাম্প এগিয়ে আছেন। গত জানুয়ারি মাসে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনের রাস্তায় ছয়টি প্রাণ ঝরে গেল। এ কেমন গণতন্ত্র?’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে কোনো প্রাণ ঝরেনি। সেখানে প্রতিদিন আমেরিকার মতো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এমনকি শিশুরাও প্রাণ দিচ্ছে। তাহলে কেন আমাদের ধমক দেন?’
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম যতই ভয় দেখান লাভ নেই। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। কারণ শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো নেতা দেশে নেই যাকে মানুষ বিশ্বাস করে।’
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন হতে দেবেন না, দেখব কে নির্বাচন ঠেকায়? বিএনপির আন্দোলন মরীচিকার ঘর। সে ঘর ভেঙে যাবে। থাকবেন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সাথেই রয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আমার নির্বাচন আমি করব। তুমি (যুক্তরাষ্ট্র) আমাকে বলার কে? ফখরুল সাহেব জনগণ যখন আপনাদের ধাওয়া দেবে। তখন কোথায় যাবেন? কাছাকাছি কর্ণফুলী আছে। সেখানে ঝাঁপ দেন। আইন মানবেন না বলছেন, কী করবেন? নাশকতা করবেন? নাশকতা করতে আসলে আমরা নাশকতার কালো হাত ভেঙে দেব।’
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আইনবিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ।