স্বদেশ ডেস্ক:
বরগুনায় আলোচিত হৃদয় হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি ১২ জনকে ১০ বছর ও চারজনকে ৭ বছরের আটকাদেশ ও তিনজনকে খালাস রায় দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মশিউর রহমান খান এ রায় দেন।
১০ বছরের আটকাদেশ ১২ আসামি হলেন ইউনুছ কাজী অরফে ইউনুছ, মো: রানা আকন, মো: ইমন হাওলাদার, মো: জুয়েল কাজী, মো: নয়ন, হাওলাদার (পলাতক), মো: সজিব (পলাতক), নাজমুল শিকদার, রাইয়ান বিন অন্তর অরফে অন্তর, সিফাত ইসলাম (পলাতক), মো: মোশারেফ, মো: সাইফুল মৃধা ও মো: রাব্বি।
৭ বছর মেয়াদে চারজন আসামি হলেন মো: সাগর গাজী, মো: সাইফুল কাজী, সোহাগ কাজী ও মো: ফাইজুল ইসলাম।
তিনজন আসামি বেখসুর খালাস। তারা হলেন মো: শফিকুল ইসলাম, মো: নাঈম কাজী ও মো: রবিউল ইসলাম।
এ বিষয়টি দৈনিক নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত সুজন হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম বরগুনা থানায় ২০২০ সালের ২৬ মে রাতে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বরগুনা থানার পুলিশ পরিদর্শক শরজিৎ কুমার ঘোষ ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর ১৬ জনকে শিশু অভিযুক্ত ও নয়জনকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আসামি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরে বাদি চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি প্রদান করলে শিশু অভিযুক্ত হিসেবে রবিউল, নাইম ও রাব্বিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই অভিযুক্ত ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালত রায় প্রদান করেন।
মামলার বাদি ফিরোজা বেগম এজাহারে অভিযোগ করেন, তার একমাত্র ছেলে সুজন হৃদয় (১৬) বরগুনা সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ঘটনার দিন ২০২০ সালের ২৫ মে ঈদের দিন বিকেল অনুমান সাড়ে ৫টায় বাদির ছেলে সুজন হৃদয় তার কিছু বন্ধুসহ বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া বাজার-সংলগ্ন উত্তর পাশে জাফর সিকদারের বাড়ির পূর্ব পাশে পায়রা নদীর তীরে চায়না প্রজেক্টের ব্লক ইয়ার্ডে বেড়াতে যায়।
আসামি রফিক কাজীর নির্দেশে মামলার অন্যতম আসামি হেলাল মৃধার নেতৃত্বে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু অভিযুক্ত ১৯ জন ও প্রাপ্তবয়স্ক নয়জন আসামি সুজন হৃদয়কে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রাপ্তবয়স্ক নয়জন আসামির মামলা বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্ত আসামি পক্ষের আইনজীবী নিজাম উদ্দিন ও মোস্তফা কাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে বরগুনার বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাষ্ট্র পক্ষ মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করে বিচারককে অভিনন্দন জানাই।