স্বদেশ ডেস্ক:
যুবলীগ নেতা সাজ্জাদুল হক রেজার অশালীন আচরণ ও হত্যার হুমকির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেও বিচার না পেয়ে অবশেষে আক্ষেপ নিয়ে নিজেই বদলি হয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম সাইফুর রহমান। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন।
এদিকে তার এ বদলির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জন হলেও জেলা প্রশাসন এটিকে রুটিন ওয়ার্ক বলে দাবি করছেন।
ইউএনওর বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সাইফুর রহমানকে বদলি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে মর্মে চিঠি পেয়েছি।’
এ বিষয়ে বদলি হওয়া ইউএনও এসএম সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমরা সরকারি চাকরি করি। সরকার যেখানে ঠিক মনে করে সেখানে নিয়ে যায়। তবে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার পর থেকে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছিল। মামলার পর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। উপরন্তু তদন্ত করে ফাইনাল প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হলে বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। এমন পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে এ কর্মস্থল ত্যাগ করলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি পুনর্বিবেচনার জন্য ইতিমধ্যে আমি আইনজীবী নিয়োগ করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেছি।’
এ বিষয়ে ইউএনওর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিম সরকার হাকিম বলেন, ‘বাদীকে নোটিশ না করে মামলাটি খারিজ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাদী ইউএনও সাইফুর রহমান রিভিউয়ের জন্য ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেছেন। দেখা যাক কী হয়।’
উল্লেখ্য, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম প্রতিরোধ এবং খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে বাধা দেওয়ায় গত ২২শে মে দুপুরে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজাসহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুলের কক্ষে গিয়ে ইউএনওকে গালাগালি করেন। এ সময় তারা ইউএনওকে হত্যার হুমকিও দেন। এ ঘটনায় ইউএনও এসএম সাইফুর রহমান বাদী হয়ে রেজাসহ সাত জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, বেলকুচি পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি আরমান, বেলকুচি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রিয়াদ, যুবলীগ নেতা রিপন, সাইদুল, জহুরুল এবং সোহাগ।
মামলাটি তদন্তের পর বেলকুচি থানার উপপরিদর্শক শামীম রেজা সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ২৬ জুন আদালতে প্রতিবেদন দেন। পরে ৪ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়।