শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন

রাবিতে ভর্তি জালিয়াতি : ছাত্রলীগ নেতাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাবিতে ভর্তি জালিয়াতি : ছাত্রলীগ নেতাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ও তাকে সহায়তাকারী রাবি ছাত্রলীগ নেতাসহ  আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম ও আটক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মা রেহেনা বেগম জড়িতদের নাম উল্লেখ করে নগরের মতিহার থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেছেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, প্রক্সি চক্রের একটি গ্রুপের সাথে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা চুক্তি করে আহসান হাবীব। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা নগদ ও ৬০ হাজার টাকার চেক পরিশোধ করেন তিনি। ভর্তি পরবর্তীতে বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভর্তি শেষে বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আটক রেখে শিক্ষার্থীর বাবার কাছে আরো তিন লাখ টাকা দাবি করে ওই প্রক্সি চক্র। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী মো: আহসান হাবিব (১৯), আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: প্রাঙ্গন (২২), রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময় (২৪), বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাজু আহমদ(২৩), মো: সাকিবসহ (২৪) আরো অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজন।

এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে ভর্তি হতে আসে মো: আহসান হাবিব নামের এক শিক্ষার্থী। সে পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য তার মায়ের সাথে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞান ভবনে আসে।

ভর্তি হওয়ার পর ওই ভবনের বাইরে এলে ওই দিন দুপুর পৌনে ৩টায় অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তি তাকে কৌশলে অপহরণ করে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা আবাসিক হলের তৃতীয় তলায় নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর বাবার কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

এদিকে ছেলের কোনো সংবাদ না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরিয়াল বডির লোকজনের সহায়তায় ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় শের-ই-বাংলা হলের অভ্যন্তর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তারপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। মতিহার থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বীকার করে যে সে নিজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করে পলাতক আসামিদের সহায়তায় অপরের দ্বারা প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।

এই জন্য পলাতক আসামি প্রাঙ্গণের সাথে চার লাখ আশি হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। পরীক্ষায় পাশ করার পর ওই দিন সকাল ১০টায় রাজশাহী রেল স্টেশনের সামনে রাস্তায় চুক্তির নগদ তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ৬০ হাজার টাকার চেক প্রদান করে। ভর্তি হওয়ার পর বাকি টাকা প্রদান করবে মর্মে অঙ্গীকার করে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পর টাকা না দেয়ায় অপহরণকারীরা তাকে অপহরণ করে শের-ই-বাংলা হলে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং বাকি টাকা না দিলে ধারালো ছুরি দেখিয়ে খুন জগমের ভয় দেখায়। গ্রেফতার ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার প্রক্সি পরীক্ষা কোন পরীক্ষার্থী দিয়েছে, তা বলতে পারেনি।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে রাবি প্রশাসন ও আটক আসামির মা পৃথক দু’টি মামলা করেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877