স্বদেশ ডেস্ক:
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি রক্ত সঞ্চালন কেন্দ্রে রাশিয়ার একটি ‘গাইডেড বোমা’ হামলায় দুজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্কের কাছে শনিবার রাতে এই হামলার পর ভবনটিতে আগুন ধরে গেছে এমন একটি ছবি অনলাইনে পোস্ট করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
“এই একটি যুদ্ধাপরাধই বলে দিচ্ছে রাশিয়ার আগ্রাসনের পুরো চিত্র”, বলেছেন তিনি।
রাশিয়া এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি। তবে কোনো ধরনের যুদ্ধাপরাধ বা বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিযোগ রাশিয়া এর আগে সবসময় অস্বীকার করেছে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করার পর প্রথম কদিনের মধ্যেই কুপিয়ানস্ক এবং কাছের এলাকাগুলো দখল করে নেয়।
গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের এক পাল্টা অভিযানের সময় এই এলাকাটি দখলমুক্ত করা হয়। কিন্তু এই এলাকার ওপর প্রতিদিনই মিসাইল এবং গোলা হামলা চলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে জেলেনস্কি হামলাকারীদের “পশু” বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, “যারা জীবনের মূল্য বোঝেন, তাদের প্রত্যেকের কাছেই সন্ত্রাসবাদীদের পরাজিত করা একটি সম্মানজনক ব্যাপার।”
এই ঘটনার হতাহতদের ব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি জেলেনস্কি। কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তারা পরে জেলেনস্কির মতো একই ছবি পোস্ট করেছেন এবং সেখানে এই হামলার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এটি ছিল একটি অনাবাসিক ভবন।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, শনিবার রাশিয়া একটি পৃথক মিসাইল হামলাও চালিয়েছে। এই হামলায় টার্গেট করা হয় পশ্চিম খমেলনিটস্কি অঞ্চলে এটি এরোনটিক্যাল কোম্পানিকে।
রোববার রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মস্কোর দিকে আসা একটি ড্রোন ধ্বংস করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন।
রুশ কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত সপ্তাহে মস্কোর একটি আকাশচুম্বী ভবনে পরপর দুদিন ইউক্রেনিয়ান ড্রোন হামলা হয়েছে।
এরকম হামলা চালানোর কথা অবশ্য ইউক্রেন প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।
শনিবার মস্কো অভিযোগ করেছিল যে ইউক্রেন কৃষ্ণসাগরে একটি রুশ ট্যাংকারে সী ড্রোন দিয়ে হামলা করেছে। সেটিতে ১১ জন নাবিক ছিল। গত কিছুদিনের মধ্যে এটি ছিল এধরণের দ্বিতীয় সী ড্রোন হামলা।
রাশিয়ার নৌপরিবহন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কার্চ প্রণালীতে এই হামলায় ট্যাংকারটির ইঞ্জিন রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে কেউ আহত হয়নি।
কার্চ প্রণালী কৃষ্ণ সাগর এবং আযভ সাগরকে সংযুক্ত করেছে, এবং ক্রাইমিয়াকে রাশিয়ার টামান পেনিনসুলা থেকে আলাদা করেছে। রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া দখল করে নিজেদের সীমানাভুক্ত করে।
রাশিয়ার এসব অভিযোগ নিয়ে ইউক্রেন প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে , তাদের একটি ‘সী ড্রোন’ ব্যবহৃত হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি