মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪০ অপরাহ্ন

সুপ্রিম কোর্টে ‘জয়’ রাহুলের, সংসদে ফিরতে পারবেন কি?

সুপ্রিম কোর্টে ‘জয়’ রাহুলের, সংসদে ফিরতে পারবেন কি?

স্বদেশ ডেস্ক:

সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাচ্ছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ‘মোদী’ পদবি মামলায় তাকে যে দুই বছরের কারাদণ্ডের দিয়েছিল গুজরাটের নিম্ন আদালত, তাতে স্থগিতাদেশ জারি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী কী কারণে রাহুলকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়েছিল, সেটার কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি গুজরাটের নিম্ন আদালতের বিচারক। ওই শাস্তির ফলে রাহুলের সংসদ সদস্যের পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল। রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার প্রভাব শুধুমাত্র তার উপর পড়ে না। বরং তার সংসদ এলাকার মানুষের ওপরও পড়ে। সেই পরিস্থিতিতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শাস্তির উপর স্থগিতাদেশের প্রয়োজন আছে।

সেইসাথে রাহুলের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে, সেরকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি পি এস নরসীমা এবং বিচারপতি পি ভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, যাবতীয় প্রশ্ন-উত্তর শোনা হয়েছে। নির্দিষ্ট আদালতে মামলাটি বিচারাধীন আছে। ওই বিচারাধীন মামলার উপর যাতে কোনোরকম প্রভাব না পড়ে, সেজন্য মামলার ভিত্তি নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না শীর্ষ আদালত।

তবে নিম্ন আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘এই আদালতের একটি মন্তব্য ছাড়া ট্রায়াল কোর্টের বিচারক কোনো নির্দিষ্ট কারণ দেননি যে কোন কারণে তিনি সর্বোচ্চ শাস্তি দিচ্ছেন। যদি শাস্তির মেয়াদ এক দিনও কম হতো, তাহলে ওই নিয়ম (সাংসদপদ খারিজ) কার্যকর হতো না।’

সেই পরিস্থিতিতে রাহুলের শাস্তির উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হলেও কংগ্রেস নেতাকে জনসমক্ষে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলার বিবাদিকে (রাহুল) সতর্ক থাকা উচিত। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে, সেটা করা হয়ে থাকলে ওরকম মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

ফিরতে পারবেন সংসদে?
সচিবারয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সোমবার থেকেই সংসদে যেতে পারবেন রাহুল। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাহুলের সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার রাস্তা নিশ্চিত হয়েছে। তবে বেশ কিছু অফিসার বলছেন, লোকসভার সচিবালয় নোটিশ ইস্যু করলে, তবেই রাহুল অফিসিয়ালভাবে সাংসদ পদ ফিরে পাবেন।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, লাক্ষাদ্বীপের সাংসদ মুহাম্মদ ফায়জলের ঘটনা। তার ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাজার জেরে তার সাংসদ পদ খারিজ হয়। পরে কেরল হাইকোর্ট সেই সাজা নিলম্বিত করে। সদ্য মে মাসে সংসদের সচিবালয় তার সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেয়। এর আগে এই পদ ফিরে পেতে দুই মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল ফায়জলকে। তবে, রাহুলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অফিসার বলছেন, আইনত সোমবারই সংসদে যেতে পারবেন রাহুল, যদি তিনি সচিবালয়ের নোটিশ পান।

উল্লেখ্য, মণিপুর ইস্যুতে বিরোধীদের আনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসন্ন সপ্তাহে বর্ষাকালীন অধিবেশনে সংসদে ঝড় ওঠার পালা সংসদে আলোচনা ঘিরে। তার আগে সংসদে রাহুলের উপস্থিতি হতে চলেছে, কিনা, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। জানা গেছে, মঙ্গলবার এই ডিবেট লোকসভায় থাকছে। এরপর বৃহস্পতিতে এই নিয়ে থাকবে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যুত্তর। সেই সময়কালে সংসদে রাহুলের উপস্থিতি দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা।

তবে লোকসভার সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে যে, যতক্ষণ না রাহুল গান্ধীকে নিয়ে সচিবালয় কোনো নোটিশ ইস্যু করছে, ততক্ষণ রাহুল সাংসদ হিসাব সংসদে পা রাখতে পারবেন না। ফলে সে অবস্থায় পরিস্থিতি কোনদিকে যায়, সেদিকে নজর সকলের।

২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল কর্ণাটকের কোলারে একটি নির্বাচনী প্রচারে রাহুল বলেছিলেন, ‘কিভাবে সব চোরেদের পদবি মোদি হতে পারে?’ যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে রাহুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানি মামলা দায়ের করেছিলেন গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি। তার দাবি ছিল যে মোদি পদবির সমস্ত মানুষকে অপমান করেছেন রাহুল। যদিও বরাবর রাহুল দাবি করে এসেছেন, কোনো সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশ্যে সেই মন্তব্য করেননি তিনি।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877