মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

ক্যাসিনোতে অভিযান : আওয়ামী লীগে অস্বস্তি……?

ক্যাসিনোতে অভিযান : আওয়ামী লীগে অস্বস্তি……?

স্বদেশ ডেস্ক: দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর থেকেই আতঙ্কে আছেন টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তালিকায় নাম আছে এমনটা আঁচ করে অনেকে ইতোমধ্যে সটকে পড়েছেন। কয়েকজন বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। আর কেউ কেউ আছেন নিশ্চুপ। নিজেদের সম্রাজ্য গুটিয়ে নিচ্ছেন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদক্ষেপ নেয়ার কারণে আলোচনায় রয়েছে দুর্নীতিবাজ নেতা-কর্মীদের তালিকার বিষয়টি। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা আতঙ্কিত। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত নন তারা বিষয়টিকে সমর্থন দিচ্ছেন। তারা জানান, দলীয় সভাপতির নির্দেশে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে শুদ্ধি অভিযান। দুর্নীতিবাজদের একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি নন তিনি। এটি কেবল শুরু। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া তালিকায় অনেক ‘রাঘববোয়াল’ও আছেন। তাদের বিরুদ্ধেও শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে সম্প্রতি গণভবনে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি অভিযানের বিষয়ে তাদের দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। রাজধানীতে গড়ে ওঠা অবৈধ ক্যাসিনোগুলোয় ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রভাবশালীরই যাতায়াতের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ক্যাসিনো থেকে কামানো টাকার একটি বড় অংশ পেতেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার কাছে যে তালিকা রয়েছে তা আসলে দীর্ঘ। অনেক প্রভাবশালী নেতার নাম রয়েছে ওই তালিকায়। এর মধ্যে দলের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীও রয়েছেন। আছেন একটি জনপ্রিয় ক্লাবের শীর্ষ কর্তা যিনি বর্তমান যুবলীগ নেতা। সাবেক যুবলীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দুই শীর্ষ নেতার নামও রয়েছে তালিকায়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক শীর্ষ নেতাসহ আরও কিছু নেতার নামেও অভিযোগ জমা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর স্থানীয় কয়েক যুবলীগ নেতার নাম রয়েছে তালিকার শীর্ষে। তারা হলেন, মতিঝিলের স্থানীয় যুবলীগ লীগ নেতা ইমরান, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগ দক্ষিণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ, এলিফ্যান্ট রোড এলাকার যুবলীগ নেতা আরমান, তছলিম ও খোরশেদ। যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের পর যুবলীগসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। বিশেষ করে যারা নিকট অতীতে অসাধু কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন। এমন অপরাধীদের গডফাদার হিসেবে এতদিন যারা পরিচিত ছিলেন, সেই প্রভাবশালী নেতারাও এখন তাদের ফোন ধরছেন না। শুধু তাই নয়,তাদের বাড়িঘরের ত্রিসীমানায় না যেতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম রয়েছে তালিকায়। এদিকে গ্রেপ্তারের পর টেন্ডার মুঘল শামীম ও ক্যাসিনো ডন খালেদ বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে জিজ্ঞাসাবাদে। তারা অবৈধ আয়ের ভাগ পেতো। এসব সুবিধাভোগী নেতাদের অনেকেই আছেন অভিযানের তালিকায়। অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে নাম আসা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউসার অভিযান চলাকালেই বিদেশ চলে যাওয়ায় তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। আরেক ক্যাসিনো ডন সাঈদ কমিশনারও দেশের বাইরে চলে গেছেন।
দলে শুদ্ধি অভিযানের বিষয়ে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৎ উদ্দেশ্যে যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে দেশবাসীর ব্যপক সমর্থন রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমারও সমর্থন রয়েছে। অনেক নেতা আত্মভয়ে দেশত্যাগ করছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, চোরের মন পুলিশ পুলিশ। যারা নিজেদের অপরাধী ভাবছেন বা দলের সুনাম নষ্ট করে অপরাধ করেছেন তারা বিদেশে পালাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের উদ্যোগের কারনে দেশে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক। এদিকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েক দিন আগেই চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877