শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইসলাম বিষয়ক প্রশ্ন-উত্তর

ইসলাম বিষয়ক প্রশ্ন-উত্তর

-মুফতি আবদুল মালেক
প্রশ্ন: মহিলারা মাহরাম ব্যতিরেকে আটচল্লিশ মাইল বা এর চেয়ে বেশি দূরত্বের সফর একাকী করতে পারে নাÑ এ কথা আমি এক আলেমের কাছ থেকে জেনেছি। যে পরিমাণ অর্থ থাকলে হজ ফরজ হয় তা আমার আছে। কিন্তু মাহরামকে সঙ্গে নেওয়ার মতো পথ খরচ ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের মতো সামর্থ্য আমার নেই। এদিকে আমার পড়শি এক দম্পতি এ বছরই হজে যাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এ প্রতিবেশী মহিলার সঙ্গে আমি কি হজের সফরে যেতে পারি? কারণ আমার না হলেও তার তো মাহরাম আছে এবং এতে করে মাহরামের যে প্রয়োজনীয়তা, তথা নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত হওয়াÑতা তো হয়েই যাচ্ছে। আর যদি এভাবেও আমার যাওয়ার অনুমতি না থাকে শরিয়তে তাহলে ফরজ হজ আদায়ে আমার করণীয় কী?Ñরাহেলা খাতুন
উত্তর: মাহরাম ছাড়া মহিলাদের হজে যাওয়া কোনো অবস্থাতেই জায়েজ নয়। হাদিস শরিফে রাসুল (সা.) সাধারণ সফর এবং হজের সফর সব ক্ষেত্রেই মাহরাম ছাড়া মহিলাদের একাকী সফর করতে নিষেধ করেছেন।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবীজি বলেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সঙ্গে তার মাহরাম ব্যতিরেকে একাকী অবস্থান না করে। তখন এক ব্যক্তি উঠে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো অমুক অমুক যুদ্ধের জন্য নাম লিখিয়েছি। ওদিকে আমার স্ত্রী হজের উদ্দেশে বেরিয়ে গেছে। নবীজী বললেন, ফিরে যাও। তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ কর। (বোখারি : ৫২৩৩; মুসলিম : ১৩৪১)।
হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে কোনো নারী তিন দিন দূরত্বের পথে সফর করবে না। (বোখারি : ১০৮৬; মুসলিম : ১৩৩৮)।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে নারী আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে তার জন্য নিজের বাবা, ছেলে, স্বামী, ভাই বা অন্য কোনো মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে তিন দিন বা ততধিক দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়। (মুসলিম : ১৩৪০; সুনানে কুবরা, বাইহাকি ৩/১৩৮)।
এসব হাদিস থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়, মাহরাম ছাড়া হজের সফরে বের হওয়া যাবে না। আর এত সুস্পষ্ট হাদিস থাকার পর এখানে ভিন্ন কোনো যুক্তি দাঁড় করানো বাঞ্ছনীয় নয়। সুতরাং আপনার করণীয় হচ্ছে, মাহরামদের কেউ নিজ ব্যবস্থাপনায় হজের সফরে বের হয় কি না সেদিকে নজর রাখা অথবা কোনো এক মাহরামকে নিজ খরচে হজে নিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ আপনার হাতে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা। যদি দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও দুটির কোনোটাই না হয় কিংবা ততদিনে সফরে বের হওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা লোপ পেয়ে যায় তাহলে এমন ক্ষেত্রে অন্যকে দিয়ে বদলি হজ করাবেন। (আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৪-৩১৫; আদদুররুল মুখতার ২/৪৬৪-৪৬৫; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী পৃ. ৭৬ ও ৭৮; গুনয়াতুন নাসিক পৃষ্ঠা ২৬-২৭ ও ২৯; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/১৫৬)।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877