শনিবার, ০১ Jun ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জিয়া ছাড়া কোনো সেক্টর কমান্ডার যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন না: মির্জা আব্বাস দুবাই নিয়ে তরুণীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেনটি আবার চালুর ঘোষণা, চলবে যত দিন ‘অল আয়েস অন রাফা’ : বিশ্বজুড়ে যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন লোক শেয়ার করছে মানুষের বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বনই সরকার রাখেনি : রিজভী রোহিঙ্গাদের নিয়ে করা আশঙ্কার আলামত দেখা যাচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হতো এমন ১৪৮ অ্যাকাউন্ট ও পেজ সরিয়েছে ফেসবুক পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ শব্দ মুছে ফেলা দুঃখজনক : মোমেন পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতন্ত্র পারফেক্ট নয় : ওবায়দুল কাদের রাত ১২টায় বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, বিমানবন্দরে আটকা হাজার হাজার কর্মী
৫ দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা

৫ দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা

স্বদেশ ডেস্ক:

ঋণ দিয়ে তা যথাসময়ে ফেরত আসছে না। বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধ না করায় সৃষ্টি হচ্ছে ফোর্স লোন। আর এ কারণেই দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে বেশ কিছু ব্যাংকের টাকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আর সঙ্কট মেটাতে প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ধার নিয়ে চলছে ওই সব ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, গত ১৬ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত পাঁচ দিনে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে ৩৩ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ধার নিয়েছে ১৮ জুলাই আট হাজার ৮৯ কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, অনেক ব্যাংক নগদ টাকার সঙ্কটে ভুগছে। সঙ্কটে থাকা ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে চলছে। তবে কিছু ধার আছে একদিন মেয়াদি। অর্থাৎ আগের দিন ঋণ নিয়ে পরের দিন পরিশোধ করছে। এভাবে ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যাংকারদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, নানা কারণে কিছু ব্যাংক তহবিল সঙ্কটে ভুগছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক আমানতকারীদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে তা গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করে। বিতরণ করা ঋণ যথাসময়ে আদায় না হলে আমানতকারীদের অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে কষ্ট হয়। অপরদিকে বিতরণ করা ঋণ খেলাপিতে পরিণত হলেও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়ার সমক্ষমতা কমে যায়। নানা কারণে ফোর্স লোন সৃষ্টি হলেও একই অসুবিধায় পড়তে হয়। আর এ কারণেই টাকার সঙ্কট দেখা দেয়।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেপো, বিশেষ রেপো ও বিশেষ তহবিল সুবিধার আওতায় সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোকে টাকার জোগান দিয়ে ব্যাংকিং খাতের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে। নিঃসন্দেহে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে অপর একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর সঙ্কট আরো বাড়িয়ে দেবে। কারণ, এতে ব্যাংকগুলোর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সক্ষমতা কমে যাবে। তিনি মনে করেন, ব্যাংকগুলোকে আমানত সংগ্রহে মনোযোগী হতে হবে। কমাতে হবে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর সঙ্কট দেখা দিলে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ধার নিয়ে থাকে। তবে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে পর্যাপ্ত জোগান না থাকলে কলমানি মার্কেটে সুদহার বেড়ে যায়। এতে মুদ্রাবাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। গ্রাহকও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। দেখা দেয় আস্থার সঙ্কট। এমনি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ করে আর্থিক বাজার স্থিতিশীল রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোকে টাকার জোগান দিয়ে থাকে। বিশেষ করে ঈদকেন্দ্রিক লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করে বেশি। কিন্তু কাক্সিক্ষত হারে আমানত সংগ্রহ হচ্ছে না। প্রকৃত আমানত আসছে কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে টাকার জোগান দেয়া হচ্ছে তাও আমানাত হিসেবে দেখাচ্ছে কিছু ব্যাংক। এতে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ শতাংশের কিছু ওপরে। তবে, ৬ শতাংশ গড় আমানতের সুদহার বছর শেষে যুক্ত হলে প্রকৃত আমানত হবে আরো কম। এ কারণেই ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ সঙ্কট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিন রেপো, বিশেষ রেপো ও বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় ব্যাংকগুলোকে টাকার জোগান দিয়ে আসছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত ১৬ জুলাই চার হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, ১৭ জুলাই ছয় হাজার ৫৭২ কোটি টাকা, ১৮ জুলাই আট হাজার ৮৯ কোটি টাকা, ১৯ জুলাই সাত হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা এবং ২০ জুলাই ছয় হাজার ৩১০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে কিছু অর্থ দেয়া হয়েছে একদিনের জন্য। কিছু তিন দিন, সাত দিন ও ১৪ দিন মেয়াদের জন্য। এজন্য ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সুদ গুনতে হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ শতাংশ হারে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, টাকার সঙ্কট মেটাতে যে প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলো তহবিল সংস্থান করছে তাতে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যায় বাড়ছে ঋণের সুদহার। এতে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877