রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ন

মহাসড়কে মারণ ফাঁদ : মই দিয়ে অভিনব পারাপার

মহাসড়কে মারণ ফাঁদ : মই দিয়ে অভিনব পারাপার

স্বদেশ ডেস্ক:

যানজটমুক্ত রাখতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সীমানা এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে বসানো হয়েছে ডিভাইডার। এর ফলে আগের মতো আর রাস্তা পারাপার হওয়া যাচ্ছে না। একটু কষ্ট করে দীর্ঘ পথ ঘুরে ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু তা করতে নারাজ। ফলে যাত্রীরা শর্টকার্ট রাস্তা পার হওয়া জন্য অভিনব কায়দায় ডিভাইডারে মই টানিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা হচ্ছে। পুলিশ দেখলে দৌড়, চলে গেলে আবার সেই একই কাণ্ড চালু করেছে অসাধু পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা।

সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কজুড়ে নতুন করে ডিভাইডার বসিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তবে এতে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা পাওয়া যাবে না, বরং অবস্থার আরো অবনতি হবে বলে অনেকের শঙ্কা। অবশ্য, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, এই ডিভাইডারের ফলে সাধারণ মানুষ অতি দ্রুত সুফল পাবে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদানি নগর এলাকা হতে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দুপাশে দেয়া হয়েছে ডিভাইডার। যার ফলে চট্টগ্রামমুখী একটি লেনে সর্বদা যানজট লেগে থাকে।

শিমরাইল অংশের আসাদ মিয়া নামে এক পরিবহন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, শিমরাইল মোড়ের এই জায়গাটিতে শতাধিক বাস কাউন্টার রয়েছে। সবচেয়ে বেশি যাত্রীর চাপ থাকে এখানে। এখন যেহেতু ঈদের সময়, তাই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এখান থেকে গাড়িতে উঠে। ধরা যায়, প্রায় ২৪ ঘণ্টাই এখন যাত্রী থাকবে মহাসড়কে। তার জন্য গাড়ির চাপও থাকবে বেশি।

তিনি বলেন, নতুন করে ডিভাইডার দেয়ার ফলে রাস্তা অনেক ছোট হয়ে গেছে। যাত্রী ওঠানামা পিছনে জ্যাম লেগে যায়। হয়তো রাস্তায় ডিভাইডারটা এখন না দিলে এই জ্যামটা থাকত না।

মহাসড়কের ব্যবসায়ী শুভ বলেন, এই ডিভাইডারগুলো দেয়ার পর থেকে প্রায়ই এই সড়কে দুর্ঘটনা হচ্ছে। বিশেষ করে সকাল বেলায় এসে দেখি বাস অথবা ট্রাক এই ডিভাইডারের উপর উঠিয়ে দিয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও পরিবহনগুলোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কাচপুর হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই শরফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৮ হাজার গাড়ি পারাপার করে। ঈদের সময় পর্যায়ক্রমে এই সড়ক দিয়ে ২৮-৩০ হাজারের মতো গাড়ি যাতায়াত করে। বর্তমানে সাইনবোর্ড থেকে বরাব এলাকা পর্যন্ত যানজট নিরসনে ৩৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করে যাচ্ছে। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের পুলিশ সদস্যের সংখ্যাও আরো বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দেয়া হলে যাত্রী ও গাড়ির চাপ বাড়তে থাকবে। তখন ব্যাপকণ চাপ থাকে এই সড়কে। এই সময় সড়কে ডিভাইডার দেয়াতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হবে। শিমরাইল মোড়ের এই জায়গায় অনেক গাড়ি থামিয়ে রাখা হয়। তাই ডিভাইডার দেয়ার কারণে রাস্তা ছোট হয়ে গেছে। এখন গাড়িএকটু থেমে থাকলেই যানজট লেগে যায়। ঈদের কয়েক দিন আগের বাড়তি চাপে সড়কের এই লেনটিতে যানজট লেগে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেছেন, ডিভাইডারগুলো দেয়া হয়েছে সড়কে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়। আমরা একটি রাস্তাকে সর্বক্ষণ চালু রাখার জন্য এই ডিভাইডারগুলো দিয়েছি। এই ডিভাইডারগুলো দেয়ার ফলে লোকাল গাড়ি যাত্রী নেবে এক লেনে, আর আরেকটি লেন দিয়ে গাড়ি সোজা চলে যাবে কাঁচপুর ব্রিজের দিকে। আমরা মূলত এক্সপ্রেসওয়ের মতো করে চিন্তা ভাবনা করে দিয়েছি। এছাড়া ঈদের বাড়তি চাপের আগেই আমাদের এই কাজটি শেষ হয়ে যাবে।

এই ডিভাইডারের ফলে সড়কে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন হওয়ায় গাড়ি চালকরা কেউ কেউ হয়তো অভ্যস্ত না। তাই হয়তো একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে অভ্যস্ত হয়ে গেলে আর কোনো সমস্যা হবে না।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877