স্বদেশ ডেস্ক:
চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাবদাহ বয়ে চলেছে। টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। আর এই টানা তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এখানের জনজীবন।
রোববার সকালে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকেছে। আর এই কারণে সড়কে মানুষের সাথে সাথে যানবাহন চলাচলও কমে গেছে।
এছাড়া আসন্ন বৈশাখ ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। প্রখর রোদের ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে। বিশেষকরে তীব্র রোদের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক, ঠেলা ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে পারছেন না। ফলে অনেককে অলস সময়ও পার করতে দেখা গেছে।
আবার অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন। এছাড়া এই তাপপ্রবাহে রোজাদারদের কষ্টও বেড়েছে। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। এই তাপমাত্রায় অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতায়ও অসুস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ।
জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। এর প্রভাব পড়েছে আসন্ন পয়লা বৈশাখ ও ঈদের বিক্রিতে। চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রিন্স প্লাজা মার্কেটের রাজু ফ্যাশনের স্বত্ত্বাধিকারী রাজু আহমেদ বলেন, সন্ধ্যার পর ক্রেতা কিছুটা বাড়লে এই গরমের কারণে সারাদিনই ক্রেতাদের দেখা মিলছে না।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়। যা ছিলো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত একটানা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হচ্ছে।
গত ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও গতকাল শনিবার ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বশেষ আজ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, রোববার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এটি এই মৌসুমের ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া গত সাত দিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় মার্চ ও এপ্রিল মাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মার্চে গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে তাপমাত্রা আরো বেড়েছে।