স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশের থেকে ১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খোশমেজাজেই ব্যাট করতে নেমেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু সাকিবের ঘূর্ণি জাদুতে খুশির রেশ বেশিক্ষণ থাকেনি। এক ওভারেই দুই আফগানকে ফিরিয়ে শুরুতেই স্বস্তি এনে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আফগানিস্তানের সংগ্রহ ১০ ওভারে দুই উইকেটে হারিয়ে ১৬ রান। ক্রিজে আছেন হাশমতুল্লাহ (৩) ও ইবরাহীম (৩)।
১৩৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
আফগানদের দেওয়া ৩৪২ রানের লিডে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই দলীয় শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন লিটন-সৌম্য। কিন্তু পারেননি। ১০০ রান না করতেই টাইগারারা হারিয়ে ফেলে ছয় উইকেট। তবে তাইজুল-মোসাদ্দেকের ব্যাটে দ্বিতীয় দিন শেষ করতে পেরেছিল টাইগাররা।
তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে আর বেশি দূর এগোতে পারেননি মোসাদ্দেক-তাইজুল। মাত্র ১১ রান যোগ করেই অলআউট হয়ে যান সাকিবরা। বিব্রতকর ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৩৭ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ।
এক সময় মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ ফলোঅনে পড়বে। তবে মুমিনুলের কল্যাণে ফলোঅনটা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। সর্বোচ্চ ৫২ রান আসে এই বাঁহাতির ব্যাট থেকেই। তবে দুর্দান্ত খেলেছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। দুজন নবম উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৪৮ রান। ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক।
মুশফিক-সাদমান-নাঈম ছাড়া সব ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের মুখ দেখেছেন। তবে মোসাদ্দেক-মুমিনুল ছাড়া কেউ ইনিংসটাকে লম্বা করতে পারেননি। একমাত্র লিটন দাস (৩৩) ছাড়া ২০-এর কোটাতেই থেমেছে সবার ইনিংস।
আফগান অধিনায়ক রশিদ খান একাই নেন পাঁচ উইকেট। মোহাম্মদ নবীর ঝুলিতে জমা পড়ে তিন উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ইয়ামীন ও কাইস।
প্রথম ইনিংসে রেকর্ড গড়েই থেমেছে আফগানিস্তান
আফগানরা স্বস্তিতে থেকে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন খেলতে নেমেছিল। হাতে ছিল পাঁচ উইকেট, স্কোরবোর্ডে জমা ছিল ২৭১ রান। আজ শুক্রবার আরও ৭১ রান যোগ করে ৩৪২ রানে থামে আফগানদের প্রথম ইনিংস। রশিদ-নবীদের টেস্ট ইতিহাসে যে কোনো ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রান আফগানদের।
আগে নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রান করেছিল আফগানিস্তান। প্রথম দিনে রহমতের সেঞ্চুরি, আসগরের হাফসেঞ্চুরির দ্বিতীয় দিন রশিদের হাফসেঞ্চুরিতে এই রান করতে পারে টেস্ট ক্রিকেটের নবাগত এই দলটি।
সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ১০২ রান আসে রহমত শাহর ব্যাট থেকে। ৯২ রান করেন আসগর আফগান। ৫১ রান আসে রশিদ খানের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া আফসার জাজাই আউট হয়েছেন ৪১ রান করে।
টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও নাঈম হাসান। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
পেসার ছাড়াই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে কোনো পেসার ছাড়াই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। স্পিন অ্যাটাক নিয়েই নবী-রশিদদের বিপক্ষে লড়াই করবেন সাকিব আল হাসান।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ম্যাচটি শুরু হয়।
আবু জায়েদ রাহী, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনকে নিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করা হলেও একজনও জায়গা পাননি। নতুন বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্টও জানিয়েছিলেন পিচের ধরন অনুযায়ী অধিনায়ক সাকিবের চাওয়া মতোই বোলার নেওয়া হবে। অর্থ্যাৎ পিচ স্পিন সহায়ক হওয়াতে একজন পেসারেরও জায়গা হয়নি একাদশে।
বাংলাদেশ নেমেছে তিনি বিশেষজ্ঞ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানকে নিয়ে। ঘরের মাঠে সাদা পোশাকে এই তিনজনই ভয়ংকর বোলার। তাদের সঙ্গে বল হাতে আলো ছড়াবেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন।
টেস্ট একাদশ :
সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, শাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাশ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসাইন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান।