শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

পরিস্থিতি শান্ত, তবে রাবিতে আজও উত্তেজনা

পরিস্থিতি শান্ত, তবে রাবিতে আজও উত্তেজনা

স্বদেশ ডেস্ক:

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের পর আজ রোববার সকালেও সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে দুই শতাধিক স্থানীয় ও শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ওইদিন সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট সংলগ্ন পুলিশ ফাড়ি ও আশেপাশের ১০ এর অধিক দোকানে আগুন দেওয়া হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর শতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেকের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আহতের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, সেখানেও শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তবে এখনো আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।’

বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী বাসের হেলপার ও ড্রাইভারকে মারতে শুরু করে। তারা দৌড়ে পাশেই ইমরান নামের এক জুতোর দোকানের ব্যবসায়ীর দোকানে গিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। তখন ওই দোকানদার তাদের রক্ষার চেষ্টা করলে তাকেও শিক্ষার্থীরা মারধর করেন। তখন অন্য দোকানরা এগিয়ে এলে সবাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে তাদের ৩০টির মতো দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের হামলায় কয়েকজন দোকানদার আহত হয়েছেন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ, প্রশাসনকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। আগুন লাগিয়ে দোকান পুড়িয়ে দিলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা কাজ করছে।

‘আশা করছি, পরিস্থিতি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হবে,’ যোগ করেন রফিকুল ইসলাম।

নগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কিছু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। ছাত্ররা বেশ কয়েকটি দোকান পুড়িয়েছে। ছাত্রদের বিষয় বেশ স্পর্শকাতর। তাই সাবধানে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।’

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১১ মার্চ) বগুড়া থেকে ‘ইসলাম ট্রাভেলস’ এর বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।

সন্ধ্যার দিকে বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে পৌঁছালে, সেখানে আবারও কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে ঝামেলা হয় ওই শিক্ষার্থীর। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদাররে উপর চড়াও হন।একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করেন। ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকালে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিকের উপর স্থানীয়রা হামলা করেছে বলে জানা গেছে।বিষয়টির মীমাংসা করতে সন্ধ্যার দিকেই ঘটনাস্থলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া গেলে তার মোটরসেইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয় স্থানীয়রা। এ রকম অনেকের মোটরসাইকেলও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877