স্বদেশ ডেস্ক:
গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে দুটি ট্রেনের ভয়াবহ সংঘর্ষে ৩৮ জন নিহতের ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন গ্রিসের অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কোস্টাস কারামানলিস বলেন, ‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন কিছু না ঘটার ভান করে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি এই ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি এবং পরিবহনমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনায় যে মানুষেরা মারা গেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ পদত্যাগ করা আমার কর্তব্য। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বিবিসি বলছে, গত মঙ্গলবার গ্রিসের লারিসা শহরের কাছে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী একটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৫ জন।
লারিসা শহরের কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীবাহী ট্রেনটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকি যাচ্ছিল। আর মালবাহী ট্রেনটি থেসালোনিকি থেকে লারিসা যাচ্ছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে ৩৫০ জন আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর প্রায় ২৫০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কারামানলিস ঘটনাস্থল পরির্দশনের পর দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ লারিসা শহরের স্টেশন মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে গাফিলতির কারণে নরহত্যার অভিযোগ এনেছে। ৫৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ট্রেনের সিগন্যাল দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন।
তবে ভুল করার কথা অস্বীকার করেছেন স্টেশন মাস্টার। তিনি দুর্ঘটনার জন্য প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে এই দুর্ঘটনাকে ‘অকল্পনীয় এক মর্মান্তিক ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন গ্রিসের প্রেসিডেন্ট ক্যাটেরিনা সাকেলারোপলু। সেইসঙ্গে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।