স্বদেশ ডেস্ক:
বরগুনা পাথরঘাটায় বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পথে জলদস্যুর হামলায় নিখোঁজ পাঁচ জেলের মধ্যে দু‘জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
বুধবার (১ মার্চ) সন্ধ্যার পর বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডাকাতির কবলে পড়েছে এফবি ভাই ভাই ট্রলারের ওই জেলেরা।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন ট্রলারের মাঝি ও বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চামুপাড়া এলাকার মানিক জোমাদ্দারের ছেলে কাইয়ুম জোয়াদ্দার। অন্যজন হলেন বাবুর্চি আবুল কালাম।
বরগুনা সদর উপজেলার রায়ভোগ ইউনিয়নের মরহুম নাজেম হাওলাদারের ছেলে আবুল কালাম।
আর নিখোঁজ জেলেরা হলেন আব্দুল আলিম (২২), ফরিদ মিয়া (৩০) ও খায়রুল (২৮)। এদের বাড়ি বরগুনা ও তালতলীতে।
বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা জেলেরা জানান, ‘গভীর সাগরের সোনার চর এলাকায় পাঁচজনের লাশ ভাসতে দেখা গেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত তিন দিন থেকে সোনার চর ও তার আশপাশের এলাকা খুঁজতে থাকি। মঙ্গলবার দুপুরে সোনার চরের গভীরে কাইয়ুম জোয়াদ্দারের লাশ পাওয়া যায়। এরপর বুধবার সোনার চরের গভীরের বাইজদ্দার বয়া এলাকায় আমার বাবা আবুল কালামের লাশ ভাসতে দেখে উদ্ধার করি।’
১২ দিন পর কিভাবে লাশের পরিচয় সনাক্ত করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক জেলের ছেলে রুবেল জানান, ‘এ ঘটনায় ফিরে আসা জেলে ইয়াসিন জোমাদ্দার জানিয়েছেন আমার বাবার ডান হাতে ডাকাতরা কোপ দিয়েছিল। গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ইয়াসিন জোমাদ্দার ওই ক্ষতস্থান বেঁধে দিয়েছিল।’
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ‘বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জেলেকে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেয়া জেলেদের মধ্যে চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এদের একজন মারা গেছে। নিখোঁজ অন্য পাঁচ জেলের মধ্যে ১২ দিন পর দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের নিয়ে ঘাটে পৌঁছতে রাত ১০টা নাগাদ বাজতে পারে।’
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার জানান, উদ্ধার হওয়া দুই জেলের লাশ গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মালিক সমিতির নেতাদের মাধ্যমে লাশ দুটি বরগুনা মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেরুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে পায়রাবন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় এফবি ভাই ভাই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলের মধ্যে ৯ জেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়। এছাড়া বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে মালামাল লুট করে দস্যুরা। এর তিন দিন পর নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে চার জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করলেও চিকিৎসাধীন এক জেলের মৃত্যু হয়। এখন বাকি পাঁচ জেলের মধ্যে দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।