স্বদেশ ডেস্ক:
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মালিকানাধীন স্টার ফার্নিচারের নতুন শাখা উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার। ১১৭৭ লিবার্টি এভিনিউস্থ এই শাখা হবে প্রতিষ্ঠানটির ৫ম শাখা। এদিন বাদ জুম্মা শাখাটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে। শাখাটির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম কর্নধার রকি আলিয়ান। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির অপর তিন পার্টনার যথাক্রমে সাবরিনা খান, আতিক ইকবাল ও আইরিন সাদিয়া উপস্থিত ছিলেন। এরা সবাই ক্লাসমেট আর বিশ্বস্থ বন্ধু।
সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ নবান্ন রেষ্টুরেন্টে গত ৬ ফেব্রুয়ারী সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, সততা আর গ্রাহক সেবার মাধ্যমেই স্টার ফার্নিচার তার আগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। সেই লক্ষ্যে এবং গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই নতুন শাখা খোলা হয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী কমিউনিটির গ্রাহকদের জন্য থাকবে বিশেষ সেল থাকবে শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রকি আলিয়ান বলেন, স্টার ফার্নিচারের সফলতায় মিডিয়ার অব্যাহত সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বাসের সাথে নিজেদের শ্রম ও সততা, কমিউনিটির প্রতি দায়বদ্ধতাসহ সকল শুভ ইচ্ছার সমন্বয়ে স্টার ফার্নিচারের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। ‘প্রচারেই প্রসার’ এ প্রবাদ বাক্যটি ব্যবসা পরিচালনা ও অগ্রগতিতে একটি বাস্তব সত্য। সে গুরুদায়িত্বটি মিডিয়া প্রতিনিয়তই পালন করে যাচ্ছে বলে আবারো কৃতজ্ঞতা। তিনি বলেন, আমাদের অর্থ, শ্রম ও উদ্যোমী প্রচেষ্টায় এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্রাঞ্চ সুনামের সাথে এগিয়ে চলছে। স্বল্প মূল্যে গুণগত মানের ফার্নিচার এবং ম্যাট্রেস সবার বাসায় পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে আমরা অনেক কাছের মানুষদের হারিয়েছি। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাসহ নানা কারণে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কম-বেশী ক্ষতিগ্রস্থ। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে আমরা এগিয়ে চলার চেষ্টা করছি। মিডিয়ার সহযোগিতা পেলে আমরা আরো এগিয়ে যাবো। কমিউনিটির সেবায় কাজ করে যাবো সততার সাথে। নিউইয়র্কের যেকোনো স্থানে ষ্টার ফার্নিচার বাংলাদেশী ক্রেতাদের সর্ব সময় ফ্রি ডেলিভারি দিয়ে আসছে। ২০১৮ সাল থেকে প্রতিটি শাখায়ই ফাইন্যান্সিইং এর সুযোগ রাখা হয়েছে। ক্রেতারা চাইলে ফোনেও অর্ডার করার ও সুযোগ রয়েছে । আমরা ঈদ সেল, ট্যাক্স রিফান্ডসহ বিভিন্ন দিবসে ‘বিশেষ সেল’ অফার দিয়ে আসছি। ন্যূনতম মূল্যে গুণগত মানের ফার্নিচার এবং ম্যাট্রেস পৌঁছে দিচ্ছি আপনাদের নিজ বাসায় কিংবা বাড়িতে। নতুন শাখার উদ্বোধন উপলক্ষেও থাকবে বিশেষ অফার: যেমন- প্রতিটি ফার্নিচার ও ম্যাট্রেসেই থাকবে ২০% ছাড়, নিউইয়র্কের যেকোনো স্থানে, যেকোনো পণ্যের জন্যই ফ্রি ডেলিভারির সুযোগ (যেকোনো এমাউন্ট হতে পারে) এবং প্রতিজন ক্রেতার জন্যই থাকবে বিশেষ উপহার।
এক প্রশ্নের উত্তরে রকি আলিয়ান বলেন, স্টার ফার্নিচারের শতকরা ৬০ ভাগ কাষ্টমার বাংলাদেশী। এ কারনেই বাংলাদেশী কমিউনিটি অধ্যুষিত এলাকায় আমরা ব্যবসাকে প্রসারিত করছি। কাস্টমার সার্ভিসে আমরা এ+। প্রতিটি গ্রাহকের সমস্যা ও অভিযোগ আমরা তাৎক্ষনিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করি। প্রয়োজনে বাসা-বাড়ীতে গিয়েও সমস্যার সমাধার ও সেবা দেয়া হয়। স্টার ফার্নিচার থেকে ক্রেডিট কার্ডেও কিস্তিতে ফার্নিচার ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বিনাসুদে লোন দিয়ে থাকি। গ্রাহক সেবা ও দ্রব্যসামগ্রীর কোয়ালিটির সাথে কোন আপোষ নেই।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাদের ৫টি শাখায় প্রায় ৩৫ জন কর্মচারি কাজ করছেন। যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশী। পাশাপাশি অন্যান্য কমিউনিটির কর্মচারীও রয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে রকি আলিয়ান বলেন, তার শখ ছিল পাইলট হবার। এই লক্ষ্যে তিনি স্কুলে ভর্তিও হন। শিক্ষা শেষ করে সার্টিফিকেটও পান। নেন নি পাইলটের লাইসেন্সও। বিমান চালানোর পেশায় না গিয়ে, নেমে পড়ায় ব্যবসায়। বলেন, বড় ভাই দুলাল হোসাইন মাল’র ফার্নিচারের ব্যবসা ধরে রাখতে গিয়েই তার এই পেশায় আগমন।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের বাফেলো শাখা এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ আমরা কোন রিস্ক নিতে চাইনি। উল্লেখ্য, ২০১১ সাল যাত্রা শুরু করে স্টার ফানিচার এখন ফ্রানচাইজ খোলার চিন্তাভাবনা করছে। নিউইয়র্ক সিটিতে স্টার ফার্নিচারের অপর চারটি শাখাগুলো হচ্ছে: ৭৮-১৪ রোজভেল্ট এভিনিউ, জ্যাকসন হাইটস । ১৯৩৫ ওয়েসচেস্টার এভিনিউ, ব্রঙ্কস (পার্কচেস্টার)। ৩৫৮ ইস্ট ২০৪ স্ট্রীট এবং নর্থ ব্রঙ্কস এবং ১১৬-১৩ জ্যামাইকা এভিনিউ, রিচমন্ড হিল।