বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পুলিশ কর্মকর্তা উত্তমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা কলকাতায় উদ্ধার মাংসের টুকরোগুলো এমপি আনারেরই হবে : ডিবিপ্রধান লন্ডনে পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনপন্থীদের সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ৪০ কারাগারে অসুস্থ বিএনপি নেতা ইশরাক যারা আত্মসমর্পণ করেননি, তাদের কী হবে শুধু আল্লাহই জানেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাজাবাসীকে ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত না করা’ নিশ্চিত করার আহ্বান মিসরের প্রেসিডেন্টের সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা : মির্জা ফখরুল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দ্রুত পুনর্গঠনে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে তাপমাত্রা ৫৩ ছুঁইছুঁই, একজনের মৃত্যু
জাপানে ফিরে যেতে চায় জেসমিন মালিকা

জাপানে ফিরে যেতে চায় জেসমিন মালিকা

স্বদেশ ডেস্ক:

জাপানি মা নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশী বাবা ইমরান শরীফের বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা জাপান ফিরে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সে এ কথা জানায়।

জেসমিন মালিকা বলে, আমি জাপান যেতে চাই। আমাকে বলা হয়েছিল যে আমরা আমেরিকায় যাব। কিন্তু আমরা আমেরিকায় যেতে পারব না। দুই বছর থেকে আমরা এখানে আছি।

সে বলে, আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। আমার মায়ের বিষয়ে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিল। আমি নির্ভরযোগ্য রিসার্চ করেছি। আমি সব জানতে পেরেছি।

জাপানে সব কিছু রয়েছে উল্লেখ করে জেসমিন মালিকা বলে, আমার স্কুল জাপানে, আমার সংস্কৃতি জাপানে, আমার বন্ধুবান্ধব জাপানে, আমার সবকিছু জাপানে। আমি এখানে কিভাবে থাকব? আমি সেখানে যেতে চাই।

এ সময় জেসমিন মালিকার সাথে তার মা এরিকো নাকানো ও তাদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন।

এরিকো নাকানো বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট পারিবারিক আদালতকে তিন মাসের মধ্যে মামলাটি শেষ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ইমরান বিলম্ব করছেন। এটি প্রায় এক বছর হয়ে গেছে এবং এখনো বিচার চলছে। তাই আমার মা ও তৃতীয় মেয়ে সোনিয়ার সাথে দেখা করা আমার জন্য জরুরি। বাংলাদেশে আমার অবর্তমানে মেয়েদের দেখাশোনার জন্য কেউ নেই। এমতাবস্থায় তাদের সাথে নিয়ে আমার মুমূর্ষু মাকে দেখতে জাপান যেতে চেয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, ইমরান আমার ব্যক্তিগত জীবন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য বেশ কিছু গুপ্তচর নিযুক্ত করেছেন। এমনকি আমরা কাছাকাছি শপিং মলেও যেতে পারি না। বিষয়টি আমি থানা ও পারিবারিক আদালতকে জানালেও তারা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। ইমরান আমার ড্রাইভার, অনুবাদক, বন্ধু ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছে। এমনকি সে আমার বাসার রিয়েল এস্টেট ম্যানেজারকেও হুমকি দিয়েছে।

ইমরান আদালতের আদেশ অমান্য করছেন উল্লেখ করে এরিকো নাকানো বলেন, ইমরান বেশ কয়েকবার আমাকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। ভিসা কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা করেনি। তারা মূলত আমার ভিসা প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে এবং অপ্রয়োজনে বিভিন্ন প্রমাণপত্র দেখতে চায়।

জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সাথে বাংলাদেশী প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সাথে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মায় পেতে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েকমাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সাথে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা সেটা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সাথে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তা নিষ্পত্তি করতে গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আদালতকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।

এদিকে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর দুই সন্তানের বাবা ইমরান শরিফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877