স্বদেশ ডেস্ক:
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্কটা অত্যন্ত নিবিড়। আমাদের চারপাশের পরিবেশের মধ্যে আছে আমাদের বাড়িঘর, বায়ু, পানি, মাটি, গাছপালা, মানুষ, প্রাণীকুল, কীটপতঙ্গ, ইত্যাদি। এই পরিবেশেই আছে আমাদের জীবনধারণের নানা উপাদান। আবার এই পরিবেশেই থাকতে পারে হাজার রোগের উপকরণ। দূষিত বায়ু, দূষিত পানি, দূষিত মাটি হতে পারে আমাদের নানা রোগের গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আমাদের রোগ-শোকের প্রায় এক-চতুর্থাংশই হয়ে থাকে পরিবেশ দূষণের জন্য। বিশ্বজুড়ে বছরে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় পরিবেশজনিত অসুখ-বিসুখের কারণে। একটু সচেতন হলেই পরিবেশগত এসব অসুখের অনেকগুলোই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পরিবেশদূষণ হতে পারে বিভিন্ন উপায়ে। আর এ দূষণটা করি আমরাই। যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করার অভ্যাস অনেকেরই, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। শহরেও রাস্তার পাশে মূত্রত্যাগের দৃশ্য নেহায়েত কম নয়। যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগের ফলে দূষিত হয় মাটি, পানি ও বাতাস। বাড়িঘরের বা অন্য যে কোনো কর্মস্থলের ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে অনেক সময়ই ফেলা হয় যত্রতত্র। ডাস্টবিনও পরিষ্কার করা হয় না সময়মতো। এতেও দূষিত হয় পরিবেশ।
অনেকেই যেখানে সেখানে নাক-মুখ না ঢেকেই হাঁচি-কাশি দিয়ে দূষিত করি পরিবেশ। যেখানে সেখানে কফ, থুতু বা পানের পিক ফেলার অভ্যাস অনেকেরই। এতেও দূষিত হয় পরিবেশ। কলকারখানার বর্জ্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে নিষ্কাশন না করার কারণে দূষিত হয় মাটি, পানি আর বাতাস। ফলমূলের খোসা, প্যাকেটের মোড়ক, পলিথিন ইত্যাদি আমরাই ফেলি যত্রতত্র। দূষণ হয় পরিবেশ। রাস্তায় গাড়ির ধোঁয়া, ধুলাবালি, হর্নের শব্দÑ সবই তো দূষণ করছে আমাদের পরিবেশ। মাইকের শব্দ, গান বাজনার শব্দÑ পরিবেশদূষণের জন্য এগুলোও কম দায়ী নয়।। রান্না-বান্নার ধোঁয়া, বিড়ি- সিগারেটের ধোঁয়া এসবও পরিবেশ দূষণ করে চলেছে অবিরত। ক্ষেত-খামারে ব্যবহৃত সার, বিষ ইত্যাদিও দায়ী পরিবেশ দূষণের জন্য। পরিবেশ যেভাবেই দূষিত হোক, পরিবেশ দূষণের জন্য আমাদের হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অসুখ। ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, পলিওমায়েলাইটিস, যক্ষ্মা, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, কালাজ্বর, কৃমি, সর্দি লাগা, হাঁপানি, অ্যালার্জি, মাথাব্যাথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, ক্যানসারÑ কত অসুখ! একটু সচেতন হলেই আমরা এসব অসুখ প্রতিরোধ করতে পারি অনেকাংশে।
তাই আমাদের এ সুন্দর পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখাটাই হোক আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা, আমাদের অঙ্গীকার। এ প্রচেষ্টা সফল হলে সামান্য হলেও আমরা থাকতে পারব অনেক বেশি সুস্থ। আমাদের জীবনযাপন হবে আরও সুন্দর, আরও স্বাস্থ্যকর।