রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

ডিসেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ে হতে পারে উঁচু জলোচ্ছ্বাস

ডিসেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ে হতে পারে উঁচু জলোচ্ছ্বাস

স্বদেশ ডেস্ক:

ডিসেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি যখন হতে পারে ঠিক সে সময় অথবা কিছু আগে ও পরে চাঁদের পূর্ণিমা অবস্থা থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণিমার রাতে অথবা দিনে হলে পূর্ণিমার টান ও ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি মিলিত হয়ে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

সাধারণত ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় হয় না, কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম। চলতি বছর নভেম্বরের ২২ তারিখে একটি নিম্নচাপ দুর্বল হয়েছে। প্রতি বছরই নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত একটি ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ দিন যে নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে গেল তাতে বঙ্গোপসাগরে আরো কিছু শক্তি রয়ে গেছে। সেই শক্তিই জমতে জমতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লঘুচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান কানাডার সাসকাচোয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এবার ডিসেম্বরটি হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমী। শান্ত বঙ্গোপসাগর দ্বিতীয় সপ্তাহে বিক্ষুব্ধ থাকতে পারে।

আমেরিকান মডেল পূর্বাভাসের সাথে এবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া মডেল পূর্বাভাসে প্রায় কাছাকাছি সময়ে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে। মোস্তফা কামাল বলছেন, বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সঠিক আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া কেন্দ্র। এই মডেলটি গত তিন দিন ধরে যে পূর্বাভাস দিয়ে আসছে তার প্রত্যেকটিতে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কানাডার মডেল পূর্বাভাসে ডিসেম্বরের ৪ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। এই দুই মডেল পূর্বাভাসে, ৬ ডিসেম্বর সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের কাছে অবস্থান নির্দেশ করেছে। এর দুই দিন আগের আমেরিকান মডেলের পূর্বাভাস যদিও ৭ ডিসেম্বরের পরে লঘুচাপ সৃষ্টির কথা বলেছিল। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া কেন্দ্রের মডেলে ডিসেম্বরের ৪ তারিখে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করেছে।

মোস্তফা কামাল বলেন, প্রকৃতপক্ষে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টির পরিণতি নির্ধারিত হবে ভারতীয় উপমহাদেশের আকাশে বহমান জেট স্ট্রিমের ওপর। এ ছাড়া ৮ ডিসেম্বর চাঁদের পূর্ণিমা অবস্থা থাকবে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ৬ ডিসেম্বর সৃষ্টি হলে উপকূলে আঘাত করার সম্ভাব্য দিন হবে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে। ঘূর্ণিঝড়টি যদি প্রকৃতপক্ষে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানে তবে চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীর মিলিত প্রভাবে ওই সময়ে পূর্ণিমার টানের জলোচ্ছ্বাসের সাথে যুক্ত হবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস। ফলে যে স্থানের উপকূল দিয়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে সে স্থানের উপকূল স্বাভাবিকের চয়ে অনেক বেশি উচ্চতার ঢেউয়ে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে।

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাতের স্থান হতে পারে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের মধ্যবর্তী যে কোনো স্থানে। স্থলভাগে আঘাত করার স্থানটি পুরোপুরি নির্ভর করবে ভারতীয় উপমহাদেশের ঊর্ধ্বাকাশে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত জেট স্ট্রিমের অবস্থান ও ঐ জেট স্ট্রিমের মধ্যে অবস্থিত বাতাসের শক্তির ওপর।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877