স্বদেশ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক এ সপ্তাহে ইউক্রেনে হামলা চালানো রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘পদ্ধতিগত’ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বলেন, নির্যাতনের ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে, ক্রেমলিনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতারা এ সম্পর্কে জানেন এবং তা সমর্থন করেন।
রাশিয়া দাবি করেছে, অভিযোগটির সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই এবং এতে ইউক্রেনীয় নৃশংসতার কথা উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে এক বিবৃতিতে গ্লোবাল ক্রিমিনাল জাস্টিসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বেথ ভ্যান শ্যাক বলেন, বেসরকারী সংস্থা, মিডিয়া এবং যুদ্ধাপরাধের নিবেদিত তদন্তকারীদের দ্বারা সংগৃহীত তথ্যে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে।
ভ্যান শ্যাক বর্তমান যুদ্ধাপরাধগুলো নথিবদ্ধ করা এবং সর্বশেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা অন্যান্য উপযুক্তস্থলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপনের বিভিন্ন প্রচেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন জাতিসংঘের সনদের একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, এবং আমাদের কাছে পাহাড় সমান প্রমাণ রয়েছে যে রাশিয়ার বাহিনী মোতায়েনকৃত প্রতিটি অঞ্চলে তাদের আগ্রাসন সংঘটিত পদ্ধতিগত যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে বেসামরিক জনগণের উপর এবং বেসামরিক অবকাঠামোগুলোতে ইচ্ছাকৃত, নির্বিচার এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ আক্রমণ। আমরা বেসামরিক নাগরিক ও যুদ্ধবন্দীদের হেফাজতের অপব্যবহার এবং এই অপরাধগুলো ধামাচাপা দেয়ার প্রচেষ্টাও দেখছি।’
তিনি আরো বলেন, এই নৃশংসতা কোনো দুর্বৃত্ত ইউনিট বা ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে নয় বরং তাতে রাশিয়ার পুরো বাহিনীই জড়িত, সেটা এর ধরন দেখলেই বোঝা যায়। বিশেষ করে ‘ফিল্টারেশন’ ক্যাম্পগুলির কথা উল্লেখ করে তিনি ক্রেমলিনের সরাসরি সমর্থনের ইঙ্গিত দেন।
ভ্যান শ্যাকের এই মন্তব্য একই সময়ে এসেছে যখন রাশিয়ান সূত্রগুলো দাবি করছে যে ইউক্রেনীয় বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের মান নির্ধারণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ে সমর্থন জানায়নি। তবে এ ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন চলমান কিছু তদন্তকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করছে যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা।
ওয়াশিংটনে অবস্থিত রুশ দূতাবাস ফেসবুকে পোস্টে বিবৃতিতে জানায়, ‘ইউক্রেনীয় নব্য-নাৎসিদের হাতে আটক রুশ সামরিক কর্মীদের হত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারের বিষয়ে আমাদের বক্তব্য আমরা বিশেষ দূত বেথের [ভ্যান শ্যাক] কাছে জানিয়েছি। ওই কর্মকর্তা আমাদের নিরস্ত্র সৈন্যদের গণহত্যার সরাসরি নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যদিও আমেরিকান সাংবাদিকরা এই ট্র্যাজেডিকে দমিয়ে না রেখে সংশ্লিষ্ট ভিডিও উপকরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।’
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা