স্বদেশ ডেস্ক:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তার বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে রামপুরা থানা পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মাওলা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো: সেলিম রেজা বিষয়টি জানিয়েছেন।
এর আগে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় বুশরাসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় রামপুরা থানায় নিহত ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা মামলা করেন।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানা বুশরার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে মামলা করেন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় এ মামলা হয়। এরই মধ্যে বনশ্রী এলাকা থেকে বুশরাকে গ্রেফতার করেছে রামপুরা থানা পুলিশ।’
তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা: শেখ ফরহাদ বলেন, নিখোঁজের ৭২ ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশকে হত্যা করা হয়েছে।
ডা: শেখ ফরহাদ জানান, পরশের পুরো মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সেগুলোর কোনোটাই সামান্য আঘাত নয়। তার ভিসেরা পাঠিয়েছি, দুই থেকে তিন দিন পর বলতে পারা যাবে সে কিভাবে মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবশ্যই এটা হত্যাকাণ্ড।
তিনি বলেন, ‘ফারদিনের পুরো মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাত পাওয়া গেছে। বুকের ভেতরে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি, এটি অবশ্যই হত্যাকাণ্ড। ময়নাতদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বলেন, বুয়েট, ঢাবিসহ তিন জায়গায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। পরে সে বুয়েটে ভর্তি হয় কিন্তু হলে যায়নি। তার ভর্তির কিছু দিন পর আবরার হত্যাকাণ্ড ঘটে। এরপর থেকে ছেলে আর হলে যেতে চায়নি। যে ভয়ে ছেলেকে বুয়েটের হলে আমরাও যেতে বলিনি আজ সেটাই সত্যি হলো।