রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

মেগান যেন না আসেন, হ্যারিকে বলেছিলেন চার্লস

মেগান যেন না আসেন, হ্যারিকে বলেছিলেন চার্লস

স্বদেশ ডেস্ক:

প্রিন্স হ্যারির উপস্থিতি নিয়ে কারো আপত্তি নেই, কিন্তু রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন তাকে যেন হ্যারির স্ত্রী মেগান দেখতে না আসেন! একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে দাবি করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, চার্লস তার ছোট ছেলেকে এই কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। সে দিনই স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে মারা যান রানি।

দাদি গুরুতর অসুস্থ, এই খবর হ্যারিকে জানিয়েছিলেন স্বয়ং চার্লস। রাজপরিবারের সাথে সচেতনভাবে দূরত্ব বাড়িয়ে সপরিবার হ্যারি এখন থাকেন আমেরিকায়। কিন্তু দিন কয়েক আগে ব্যক্তিগত কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লন্ডনে আসেন তিনি। ছিলেন তার নির্ধারিত রাজপরিবারের বাসভবন ফ্রগমোর কাসলে।

হ্যারির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এবার ইংল্যান্ড সফরকালে দাদির সাথে দেখা করার পরিকল্পনা ছিল না তার। তবে বাবার ফোনে সব পরিকল্পনা পাল্টে যায়। চার্লস হ্যারিকে জানান, দাদিকে শেষ দেখা দেখতে হলে তিনি যেন অবিলম্বে বালমোরাল চলে আসেন। কিন্তু সাথে যাতে মেগান না আসেন, সে বিষয়ে হ্যারিকে সতর্ক করে দেন তার বাবা। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডটিতে লেখা হয়েছে, ‘চার্লস হ্যারিকে বলেন, এই রকম দুঃখের সময়ে বালমোরাল প্রাসাদে মেগানকে আনা যথাযথ হবে না। কারণ হিসেবে চার্লস জানান, উইলিয়াম-পত্নী কেটও আসবেন না। একেবারে পরিবারের কাছের লোকজনকে ডাকা হয়েছে। বারবার করে বলে দেন, মেগান যেন না আসেন।’

বৃহস্পতিবার বালমোরাল প্রাসাদে সবার শেষে পৌঁছন হ্যারি। ততক্ষণে মারা গেছেন রানি। রাতটা সেখানেই কাটান তিনি। আর শুক্রবার সবার আগে বেরিয়ে আসেন প্রাসাদ থেকে। এক সময়ে বড় ছেলের ঘরের ছোট নাতি হ্যারি দাদির খুবই আদরের ছিলেন। প্রকাশ্যে, দু’জনকে নানা মজার কাজকর্ম, হাসি, কৌতুক করতে দেখা গেছে। যেমন ২০১৬ সালে একসাথে একটি মজার ভিডিও করেছিলেন তারা। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে আর সেই ভাব-ভালোবাসা নেই। অনুমান, রাজপরিবারের বিলাসবহুল, অভিজাত জীবনযাপন থেকে দূরে সন্তানদের বড় করতে চেয়েছেন হ্যারি-মেগান। বিবাহবিচ্ছিন্না, হ্যারির থেকে বেশ কয়েক বছরের বড়, অশ্বেতাঙ্গ হলিউড অভিনেত্রী মেগানকে রাজপরিবারের বধূ হিসেবে মানতেও আপত্তি করেছিলেন পরিবারের অনেকে।

হ্যারির সাথে রাজপরিবার দূরত্বের ইঙ্গিত ফের মেলে সে দিন যখন লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিনমুখী রয়্যাল এয়ার ফোর্সের বিমানে তার জায়গা হয়নি। ওই বিমানে স্কটল্যান্ডে পৌঁছন চার্লসের বড় ছেলে উইলিয়াম, রাজকুমার অ্যান্ড্রু, রাজকুমার এডওয়ার্ড ও তার স্ত্রী সোফি। কিন্তু হ্যারিকে ওই বিমানে ওঠার অনুমতি দেয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোষণা করা হয়েছিল, স্ত্রী মেগানকে নিয়ে স্কটল্যান্ডে যাচ্ছেন হ্যারি। কিন্তু পরে জানানো হয়, হ্যারি একাই যাচ্ছেন। এই সব টালবাহানার পরে সন্ধ্যা ৭টা ৫২ নাগাদ হ্যারি পৌঁছন বালমোরালে। সবার শেষ। তার প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে রানির মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করে দেয়া হয়েছিল। পরের দিন সকাল ৮টা ২০তেই ফেরার বিমান ধরতে অ্যাবারডিন বিমানবন্দরে পৌঁছে যান হ্যারি। চলে আসেন লন্ডনে।

হ্যারির একটি ভিডিও ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে। তাতে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের এক কর্মীর কাঁধে হাত রেখে রাখছেন তিনি। জানা গেছে, ওই মহিলা এগিয়ে এসে রানির মৃত্যুর খবরে সমবেদনা জানান হ্যারিকে। তার এই সহজ, সরল ব্যবহারের জন্যই তিনি ব্রিটেনবাসীর খুবই প্রিয়।

রাজপরিবার হ্যারিকে এভাবে দূরে সরিয়ে দেয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের অনেকেই। ফিরতি বিমানের এক সহযাত্রী বলেছেন, ‘এ রকম সময়ে রাজবাড়ির কেউ তার পাশে নেই। আমার আশা, রানির মৃত্যুর পরে অন্তত এই ভাঙন জুড়বে।’

হ্যারি ও উইলিয়াম, দুই ভাই এখন উইনসরে রয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যাবেলা দু’জনকে সস্ত্রীক উইনসর প্রাসাদের সামনে দেখা যায়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877