সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন

জোট ছেড়ে দেওয়া দুই দলের নতুন কৌশল

জোট ছেড়ে দেওয়া দুই দলের নতুন কৌশল

স্বদেশ ডেস্ক:

সম্প্রতি বিএনপি জোট থেকে জামায়াতে ইসলামীর চলে যাওয়ার একটি অনানুষ্ঠানিক ঘোষণাকে বিএনপি-জামায়াতের নতুন কৌশল বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা। তারা বলছেন, জামায়াত আদৌ বিএনপিকে ছেড়েছে কিনা তা স্পষ্ট হবে আগামী দিনে তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে। ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা বলেন, বিএনপি তথা ২০-দলীয় জোট থেকে জামায়াত সরে গেলেও বিএনপির গায়ে যে তকমা আছে তা মুছে যাবে না। সে কারণে সচেতন জনগণের আস্থা বিএনপি পাবে না।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য আমাদের সময়কে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের গন্তব্য এক। ফলে তারা একে অপরকে ছেড়ে গেছে বা যাবে এটা এখনই বলা যাবে না। এটা তাদের কৌশল হতে পারে। কারণ আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে যাবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। ফলে নির্বাচনে যেতে হলে তাদের স্বাভাবিক গেইম-প্ল্যানে কিছু হবে না। এটা তাই নতুন পরিকল্পনারই অংশ।

অবশ্য আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর উপলব্ধি ভিন্ন। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘জামায়াত চলে যাওয়ায় বিএনপির লাভ হলো। আমার ক্ষুদ্র ধারণাতে বাংলাদেশের ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবেই থাকতে চায়। বাস করতে চায়। জামায়াতের পলিসিতে অল্পসংখ্যক লোক আছে, তাদের মাস-সাপোর্ট (জনসমর্থ) নেই। আমার মনে হয় যে বিএনপি দেরিতে হলেও তাদের একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে যদি দেখি তাদের ভোটাররা এই মুহূর্ত থেকে চাঙ্গা হবে।’

আওয়ামী লীগের আরেক সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘মনে রাখতে হবে বিএনপির ভোট ব্যাংক কিন্তু জামায়াতের ভোট ব্যাংক। সুতরাং জামায়াত তাদের সঙ্গে যদি না থাকে, তাহলে বিএনপির ভোটের বাক্স খালি হবে। সুবিধার চেয়ে অসুবিধাও তো আছে।’

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত একই গাছের একই ডালের দুই পত্র-পল্লব। এক পাতায় বিএনপি অন্য পাতায় জামায়াত। এরা মুখে অনেক কথা বলে। ওরা দ্বিচারিতা করে, এখনো মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। আসলে এরা মুখে বললেও একত্রেই আছে। এটা বলে মানুষকে আবারও বিভ্রান্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার কাছাকাছি যাওয়ার একটা অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু না।’

১৪-দলীয় জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এটা উভয় দলের সমঝোতার মধ্য দিয়েই হয়েছে। এটা তাদের কৌশল হতে পারে। তাদের ভবিষ্যতের কর্মকা-ে প্রমাণিত হবে কার কী ভূমিকা।’

১৪-দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিএনপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চর্চা করে। তারা সব সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠিকানা ও পৃষ্ঠপোষক। যারা জাতির পিতা মানে না, মীমাংসিত সংবিধানের চার মূলনীতি মানে না, ত্রিশ লাখ শহীদের বিষয়টি মানে না, স্বাধীনতার ঘোষণা মানে না, তারা এখন পর্যন্ত ’৭১-এর খুনি ও ’৭৫-এর খুনিদের পক্ষে প্রকাশ্যে ওকালতি ও পৃষ্ঠপোষকতা করে। যতক্ষণ এই বিষয়গুলোতে তাদের অবস্থান না পাল্টাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির বিষয়ে রাজনৈতিক আলোচনা না করাই ভালো। কারণ জামায়াত চলে গেলেও তাদের অবস্থান পাল্টাচ্ছে না।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877