স্বদেশ ডেস্ক:
গত ১৫ আগস্ট বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে ট্রলার ডুবে ভাসতে ভাসতে ভারতে চলে যাওয়া জেলেদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউনুস গাজী (৪৭) নামের এক জেলে মারা গিয়েছেন।
রোববার সকাল ১০টার সময় বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ভারত থেকে মোবাইল ফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার সকালের দিকে ইউনুস গাজীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই ইউনুস গাজীর লাশটি ফিরে পেতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।
ইউনুস গাজী পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার বিপিনপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শুক্কুর গাজীর ছেলে।
ইউনুস গাজীর মেয়ে চম্পা জানান, পটুয়াখালীর মহিপুর থানার বাবুল কোম্পানির মালিকানাধীন এফবি জান্নাত ট্রলারে রহমাতুল্লাহ মাঝির নেতৃত্বে গত ১৫ আগস্ট বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে যান। পরে ১৮ আগস্ট তারা ঝড়ের কবলে পড়েন এবং এর পরের দিন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ট্রলারটি উল্টে ডুবে যায়। এরপর থেকে চম্পার বাবা ইউনুস গাজী নিখোঁজ ছিলেন। বাকি ১৪ জেলে বাড়িতে ফিরলেও ৮ দিন কোনো খোঁজ মেলেনি তার বাবা ইউনুস গাজীর।
ট্রলারডুবির চারদিন পর ভাসমান অবস্থায় বঙ্গোপসাগর থেকে তার বাবাকে ভারতীয় জেলেরা উদ্ধার করে ভারতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখান থেকে বুধবার ভারতের এক মহিলা চিকিৎসক তার বাবার খোঁজ দেয় এবং ওই দিন সন্ধ্যায় তার বাবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেয়। তখন তার বাবা তাকে তার ছোট ভাইবোনদের দিকে খেয়াল রাখতে বলেন এবং তাদের কোনোদিন সাগরে না
পাঠানোর জন্য পরামর্শ দেন।
ভারতের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে চম্পা জানান, তার বাবা চারদিন সাগরে ভেসে থাকায় তার শরীরের চামড়া খসে গিয়েছে। দুই দিন আইসিইউতে ভর্তি থাকার পর শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ইউনুস গাজীর স্ত্রী ফাতিমা বেগম জানান, ‘আমার স্বামী সাগরে বাঁচার জন্য অনেক যুদ্ধ করছে। তারপরও বাঁচাতে পারে নাই। আমি শেষবারের মত আমার স্বামীকে একটু দেখতে চাই। আমার বাড়িতে কবর দিতে চাই।’
গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, কাকদ্বীপে ৪৬ জেলে, রায়দীঘি থানায় ১১ জন, কোস্টাল পুলিশ স্টেশনে ১৭ জন, কেনিংয়ে ১৬ জন জেলে রয়েছেন। এদের মধ্যে কাকদ্বীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহিপুরের ইউনুস গাজী মারা গেছেন।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে ইউনুস গাজী লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আমরা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে চাচ্ছি বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে। এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা প্রত্যাশা করছি।