বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

ইসির সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ১৪ দলে

ইসির সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ১৪ দলে

স্বদেশ ডেস্ক:

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার বিকালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও নানা প্রতিক্রিয়া এসেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ কিছু রাজনৈতিক দল মনে করে, ইসির এই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনার কৌশল। মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট ১৪ দলের শরিকদের মধ্যেও।

নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ইসির সঙ্গে সংলাপে আমরা ৩০০ আসনেই ইভিএম চেয়েছিলাম। নির্বাচন কমিশন অর্ধেক আসনে সম্মত হয়েছে। আমরা কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।

১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন প্রকার সংশয় ও ইভিএম পদ্ধতিকে ত্রুটিমুক্ত করার প্রস্তাবগুলো আমলে না নিয়ে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অর্ধেক আসনে ইভিএম ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিতান্তই হতাশাব্যঞ্জক। বস্তুত এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন হুদা কমিশনের সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখল। এর জন্য ঘটা করে সংলাপের প্রয়োজন ছিল না।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ইসি ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি চূড়ান্ত নয়। এ পর্যন্ত যেসব জায়গায় ইভিএমে ভোট হয়েছে সেখানে খুব একটা সমস্যা দেখা দেয়নি। ভোটের ফল নিয়েও প্রশ্ন ওঠেনি। তাই ইভিএম সমস্যা নয়। মূল সমস্যা রাজনৈতিক। তবে এটা ঠিক ইভিএম আমাদের দেশে একটি নতুন পদ্ধতি। এর কিছু নেতিবাচক দিক আছে। ধীরগতিসহ কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতিও আছে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন এসব সমস্যার সমাধান করেই ইভিএমে ভোটের আয়োজন করবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যালটে বা ইভিএমে হোক, সবার আগে দলগুলোকে ফল মেনে নেওয়ার মানসিকতা দেখাতে হবে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া আমাদের সময়কে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটা কম্প্রোমাইজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটা সফল হবে বলে মনে হয় না। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের বক্তব্য ভিন্ন। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া না হওয়ার ক্ষেত্রে ইভিএম না ব্যালট- সেটি বিষয় নয়। এটি নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের শিরদাঁড়ার ওপর। সুতরাং সবার আগে কমিশনকেই দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে।

গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ইসির সঙ্গে সংলাপে কিছু দল ইভিএমের পক্ষে কথা বলেছে, কিছু দল বিপক্ষে বলেছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে ইভিএম যে খারাপ এটা তো প্রমাণ করতে হবে। এখনো তো ইভিমের ত্রুটি প্রমাণিত হয়নি। ইভিএমের মধ্যে নির্বাচন করলে ক্ষতি কোথায়?

জাতীয় পার্টির (মঞ্জু, জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট। প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে ভালো জিনিস। আমরা ৩০০ আসনেই এটি ব্যবহারের জন্য বলেছিলাম। তা না হলে এক নির্বাচনে দুই পদ্ধতি হয়ে যায়। গণ-আজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার বলেন, দুনিয়া এগোচ্ছে প্রযুক্তিতে, আমরা পিছিয়ে থাকব কেন। তাই আমরা ইসির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।

১৪ দল থেকে সদ্য অব্যাহতি নেওয়া বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এক বিবৃতিতে বলেন, এই সিদ্ধান্ত একেবারেই অবাঞ্ছিত ও অপ্রত্যাশিত। এটি বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে তাদের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।

জোটের বাকি ৪টি দল বাসদ, তরিকত ফেডারেশন, ন্যাপ ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রের নেতাদের ফোন করেও পাওয়া যায়নি। ইসির সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা ইতিবাচক বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877