মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন

কাশ্মির ইস্যুতে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে : ইমরান খান

কাশ্মির ইস্যুতে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে : ইমরান খান

Security personnel stand guard at a roadblock in Jammu on August 7, 2019. - A protester died after being chased by police during a curfew in Kashmir's main city, left in turmoil by an Indian government move to tighten control over the restive region, a police official said on August 7. (Photo by Rakesh BAKSHI / AFP)

স্বদেশ ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যকে পৃথক করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। এরমাঝে জাতিগত নিধনের আশঙ্কা দেখছেন তিনি। এই সিদ্ধান্তকে হটকারিতা উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীর ইস্যুটি বিশ্বের প্রতিটি ফোরামে তুলবেন। জাতিসংঘসহ প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন।

বুধবার বিবিসির খবরে ইমরান খানের এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার কথা তুলে ধরে জানানো হয়, কাশ্মীরের জনগণের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে পাকিস্তানে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ভারতের ঘোষণার এক দিন পরও কাশ্মীর অঞ্চলটি এখনো অবরুদ্ধ হয়ে আছে।

কাশ্মীরকে ভারত ও পাকিস্তান দুটো দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। দুটো দেশই কাশ্মীরের কিছু অংশ রয়েছে। ভারতের অংশে বহু বছর ধরে স্বতন্ত্র শাসনের জন্য লড়াই করে আসছে বিদ্রোহীরা। এ লড়াইয়ে গত তিন দশকে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

কাশ্মীর নিয়ে ভারতের ঘোষণার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইমরান খান বলেছেন, তিনি এটি বিশ্বকে জানাবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা তা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তুলব। প্রতিটি ফোরামে প্রতিটি দেশের প্রধানের সঙ্গে আমরা এ নিয়ে কথা বলব…আমরা তা গণমাধ্যমে তুলব এবং বিশ্বকে জানাব।’

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার মাধ্যমে ভারত মুসলিম–অধ্যুষিত রাজ্যের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে মনে করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছি যে ভারত কাশ্মীরে জাতিগত নিধন শুরু করবে। তারা স্থানীয় লোকজনকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করবে এবং বাইরে থেকে অন্যদের সেখানে নিয়ে এসে সংখ্যাগরিষ্ঠ বানাবে। এর ফলে স্থানীয় লোকজন দাসে পরিণত হওয়া ছাড়া আর কিছু হবে না।’

এর আগে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছিলেন, এই লড়াইয়ে কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়াবে তার সেনারা। প্রতিবেশী চীনও ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে বিরোধিতা করেছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের পর সেখানে ভারতের শাসনে অসন্তুষ্ট স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরিদের বড় ধরণের বিক্ষোভের আশঙ্কায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। অঞ্চলটিতে টেলিকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গণমাধ্যম পৌঁছাতে পারছে না। বিবিসি জানিয়েছে, তাদের শ্রীনগর প্রতিবেদক আমির পিরজাদা ফুঁসে থাকা এলাকার একটিতে পৌঁছাতে পেরেছেন। সেখানের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছেন এবং নিজেদের প্রতারিত ভাবছেন।

কোনো কোনো স্থানে বিক্ষোভ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বসবাসরত কাশ্মীরিরা জানিয়েছেন, তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

গত সোমবার ঘোষণার দিন থেকেই বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে কাশ্মীরে। এর আগেই এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক অবস্থানের এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এবার আরও বেশিসংখ্যক সেনা পাঠানো হয়েছে সেখানে।

ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আলাদা পতাকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আলাদা সংবিধান ছিল। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। এবার সেটাও নিয়ে নেয়া হলো। সরকারি প্রস্তাব বিল আকারে পেশও করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877