মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৮ অপরাহ্ন

আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ

আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ

স্বদেশ ডেস্ক

করোনা মহামারীর কারণে গত দুই বছর ঈদ-উৎসব পালন করা হয়েছে বিধিনিষেধের মধ্যে। ঈদ এলেও তখন মানুষের মনে খুশি ছিল না; ছিল না চিরায়ত আনন্দ। বরং নানা শঙ্কার মধ্যে কেটেছে ঈদের দিনগুলো; কিন্তু এবার ঈদ এসেছে আনন্দ আর খুশির বারতা নিয়ে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবার নেই কোনো বিধিনিষেধ। দুই বছর পর অন্যরকম ঈদ-উৎসবে মাতবে দেশবাসী। ঈদের নামাজ পড়ে মানুষ কোনো বিধিনিষেধ ছাড়া কোলাকুলি করবে, ঘুরবে। শিশুরা খেলবে, মজা করবে। সবাই মিলে মেহেদির রঙে হাত রাঙাবে। বড়দের কাছ থেকে সালামি-উপহার নেবে।

বাংলাদেশের আকাশে আজ রবিবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপন হবে। রবিবার চাঁদ দেখা না গেলে সোমবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সে ক্ষেত্রে আগামী মঙ্গলবার ঈদ উদযাপন করবে দেশবাসী। ঈদ কোন দিন হবে তা জানতে আজ সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠকে বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।

গত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল বিপর্যস্ত, যার প্রভাব পড়ে মানুষের জীবনযাত্রায়, ঈদ-উৎসবে। লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় তখন তাদের ঘরে ঈদের আনন্দ ছিল না, ছিল না নতুন জামা-কাপড় কেনার তাড়া। এমনকি চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় অনেকে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যায়নি গত দুই বছর; কিন্তু এবার ঈদে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ না থাকায় ঈদের দুই সপ্তাহ আগ থেকেই মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে। গত ৩ দিনের ঈদযাত্রার চিত্র বলছেÑ নিকট অতীতে এ রকম স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা বাংলাদেশ দেখেনি। কেনাকাটার ধুম চলছে মার্কেট-বিপণিবিতানে। বিক্রি বেশি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। পছন্দের জামা-কাপড় কিনতে পারায় খুশি ক্রেতারাও। তবে হাওরাঞ্চলের কৃষকদের পরিবারে এবার ঈদের আনন্দ নেই। কারণ তাদের সোনালি ফসল ধান তলিয়ে গেছে পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে। তাদের আসল-ফসল সবই গেছে জলে। অবশ্য সমতলের কৃষকের মাঝে তাদের ধান নিয়ে শঙ্কা নেই।

দুই বছর পর এবার দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। এজন্য সেখানে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হবে। গত ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার সচিবালয়ে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

গতকাল শনিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সাতটায় অনুষ্ঠেয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। সভায় ১৪৪৩ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতর উদ্?যাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন নম্বরে ফোন করে এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ নম্বরে ফ্যাক্স করে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

বায়তুল মোকাররমে ঈদের পাঁচ জামাত

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এসব জামাতে নিম্নোক্ত আলেমরা ইমাম ও মুকাব্বিরের দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। আর মুকাব্বির বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. ইসহাক।

দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী এবং মুকাব্বির হবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। আর মুকাব্বির হাফেয মো. নাছির উল্লাহ। তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এই জামাতের ইমাম হবেন হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম। এ ছাড়া মুকাব্বির হবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।

ঈদের পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দিন কাসেম। আর মুকাব্বিরের দায়িত্ব পালন করবেন মো. রুহুল আমিন। তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম।

এসব জামাতে কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মো. আবদুল্লাহ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877