স্বদেশ ডেস্ক:
চট্টগ্রামে করোনায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে বিগত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৪৮ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণের হার ৩৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
চট্টগ্রামের করোনার হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো আজ মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, এন্টিজেন টেস্ট ও নগরীর সরকারি-বেসরকারি দশ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ৩ হাজার ৬৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ১ হাজার ৩৪৮ পজিটিভের মধ্যে শহরের ৯১৯ এবং ১৪ উপজেলার ৪২৯ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৪৬০ জন। এর মধ্যে শহরের ৮২ হাজার ৭৮০ ও গ্রামের ৩০ হাজার ৬৮০ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফটিকছড়িতে ৫৯, হাটহাজারীতে ৫০, রাঙ্গুনিয়ায় ৪১, রাউজান ও মিরসরাইয়ে ৪০ জন করে, পটিয়ায় ৩৮, বোয়ালখালীতে ৩৪, আনোয়ারায় ৩০, চন্দনাইশে ২১, লোহাগাড়ায় ১৮, সীতাকু-ে ১৭, সাতকানিয়ায় ১৬, বাঁশখালীতে ১৩ এবং সন্দ্বীপে ১২ জন করে রয়েছেন। গতকাল করোনায় গ্রামে ৩ রোগি মারা যান। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৩৪৬ জন হয়েছে। এতে শহরের ৭২৮ও গ্রামের ৬১৮ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ১ হাজার ৪৬৬ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ১৭৯ দিন আগে, গত বছরের ২৯ জুলাই। ওই দিন ৩ হাজার ৯২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৩৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ সময়ে ৯ রোগির মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে গতকাল সর্বোচ্চ ৯২২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে শহরের ১৭৫ ও গ্রামের ১২৬ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৫১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৮৩ ও গ্রামের ৫২ জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে ২৯৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ১২১ ও গ্রামের ১৭টি করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৪২টি নমুনায় শহরের ৫২ ও গ্রামের ১২টিতে ভাইরাস ধরা পড়ে। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ২৮টি নমুনার মধ্যে গ্রামের দুইটিসহ ১৬টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে গতকাল ৩১২ জনের এন্টিজেন টেস্ট করানো হয়। এতে গ্রামের ১০২ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত বলে জানানো হয়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩৬৬টি নমুনার মধ্যে শহরের ৮১ ও গ্রামের ২৩টিতে করোনার জীবাণু মিলেছে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৭৬টি নমুনায় শহরের ২৯ ও গ্রামের ৩৭টিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ২৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৩ ও গ্রামের ১৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এপিক হেলথ কেয়ারে ৩৫৯ জনের নমুনায় শহরের ১৭৬ ও গ্রামের ১৭ জনের শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১২৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ৬০টি সংক্রমিত পাওয়া যায়। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১১৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৫ ও গ্রামের ২৫টি করোনায় আক্রান্ত বলে জানানো হয়।
এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ল্যাব এইডে ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত ল্যাবরেটরিতে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, শেভরনে ৩২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৪৫ দশমিক ২৮, চমেকহা’য় ৪৭ দশমিক ১০, সিভাসু’তে ৪৫ দশমিক ০৭, আরটিআরএলে ৫৭ দশমিক ১৫, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৮ দশমিক ৪১, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ দশমিক ৯১, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১২ দশমিক ৬১, এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৫৩ দশমিক ৭৬, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৪৮ দশমিক ৭৮ এবং এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৩৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। অন্যদিকে এন্টিজেন টেস্টে আক্রান্তের হার নির্ণিত হয় ৩২ দমমিক ৬৯ শতাংশ।
সূত্র : বাসস