স্বদেশ ডেস্ক: রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনি দিয়ে তাসলিমা বেগম রেনু হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হৃদয়কে (১৯) গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের অবৈধ মাদক উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটায় নারায়ণগঞ্জের ভুলতা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ ।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো: আবদুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত হৃদয় একজন সবজি বিক্রেতা। স্কুল গেটে তিনি সবজি বিক্রি করতেন। ওই এলাকায় তার বসবাস। সে তাসলিমা বেগম রেনুকে স্কুল গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখেছিলেন। ঘটনার দিন তাসলিমা তার সন্তানের ভর্তির ব্যপারে স্কুলে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি একজন নারী অভিভাবককে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে তিনি ওই অভিভাবকের বাসার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন। এতে ওই নারী সন্দেহ করে তাসলিমাকে ছেলেধরা বলে। সবজি বিক্রেতা হৃদয় এ কথা শুনে এগিয়ে যায়। তার সাথে আরো ১৫ থেকে ২০ জনের মতো মানুষ একত্রিত হয়। এ অবস্থা দেখে স্কুলের দ্বিতীয় তলায় তাসলিমাকে তালাবদ্ধ করে রাখে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের পাশেই ছিল বাজার। এ সংবাদ বাজারে পৌঁছালে আরো অনেক লোকজন স্কুলে প্রবেশ করে। এরপর হৃদয়সহ আরো লোকজন তালা ভেঙ্গে তাসলিমাকে বাইরে নিয়ে আসে এবং প্রহার করে হত্যা করে। ঘটনার পর হৃদয় নারায়ণগঞ্জ তার নিজের বাড়িতে পালিয়ে যায়। সে তার মাথা ন্যাড়া করে ফেলে এবং তার ব্যবহৃত পুরাতন পোশাক পুড়িয়ে দিতে বলে নানিকে যাতে কেউ তাকে সনাক্ত করতে না পারে। পুলিশ ঘটনার সময়ে হৃদয়ের পরিহিত কাপড় উদ্ধার করেছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় এ ঘটনার সাথে আরো যারা তার সাথে তালা ভেঙ্গেছে তাদের নামও প্রকাশ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ঘটনায় জাফর নামে একজন ইতোপূর্বে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করছি। কেউ যদি এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এবং যারা ওই পোস্টে কমেন্টস করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। হৃদয় ছাড়াও এরআগে বাড্ডা ও উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করে ডিএমপি’র বাড্ডা থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই সকালে উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার বাড্ডা থানায় ৪০০/৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাগনে নাসির উদ্দিন।