স্বদেশ ডেস্ক:
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, কোনো চাপের কাছে ইরান মাথা নত করবে না।
বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করেন।
এএফপির খবরে বলা হয়, সংসদ ভবনে রাইসি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে আরোপকৃত সকল নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই প্রত্যাহার কতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা যেকোনো কূটনৈতিক পরিকল্পনা সমর্থন করব।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের নিপীড়নমূলক নিষেধাজ্ঞা তোলার পদক্ষেপ নেব। তবে এর জন্য জনগণের জীবনযাত্রা এবং অর্থনীতিকে কোনো শর্তের মধ্যে রাখব না কিংবা তা বিদেশিদের মর্জিমত চলতে দেব না।
গত ১৮ জুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রাইসি। গতকাল সংসদ অধিবেশনে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে চার বছরের মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর রাইসি বলেন, চাপ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানকে থামিয়ে রাখা যাবে না। ইরান তার অধিকার আদায়ে কাজ করে যাবে।
ইরানের এই নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, তার সরকার আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রাধান্য দেবে। এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশ, বিশেষ করে প্রতিবেশীদের প্রতি তিনি বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার সক্ষমতা ইরানের রয়েছে।
ইরানের পেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ ও আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি, ফিলিস্তিনের হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের ৮০ জন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের অনেক গণমাধ্যমের চোখে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হয় রাইসিকে।
কে এই ইব্রাহিম রাইসি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ এবং কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা ইব্রাহিম রাইসি ১৯৬০ সালে ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন।
এই এলাকায় শিয়া মুসলিমদের পবিত্র মাজার অবস্থিত। তার পিতাও একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন এবং রাইসির বয়স যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তার পিতা মারা যান।
রাইসি মাথায় কালো পাগড়ি পরেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি পিতার পথ অনুসরণ করে পবিত্র শহর কওমের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শুরু করেন। ছাত্র থাকা কালেই তিনি পশ্চিমা-সমর্থিত শাহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেন।
আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি নেতৃত্বাধীন এক ইসলামিক বিপ্লবে ১৯৭৯ সালে শাহের পতন ঘটে। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর আয়াতোল্লাহ খোমেনি হন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
বিপ্লবের পর ইব্রাহিম রাইসি বিচার বিভাগে যোগ দেন এবং বিভিন্ন শহরে সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি আয়াতোল্লাহ খোমেনির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। আয়াতোল্লাহ খোমেনি ১৯৮১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। রাইসি ২৫ বছর বয়সে রাজধানী তেহরানের ডেপুটি প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।