স্বদেশ ডেস্ক:
গভীর রাত থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। কোনো কোনো এলাকায় জমেছে হাঁটু পানি, বড় সড়কগুলোও ডুবে আছে জমাট বাঁধা পানিতে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দুর্ভোগ আর ভোগান্তি নিয়ে কেউ যাচ্ছেন অফিসে, আবার কেউ নিজ গন্তব্যে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর সাতমসজিদ রোড, মিরপুর রোড, সাতরাস্তা, হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
গতকাল সোমবার গভীর রাত থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, ভোর হতেই তা বাড়তে থাকে। হালকা মাঝারি ও মুষলধারে বর্ষণ হয়েছে। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির থামার নাম নেই। টানা এই বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে গেছে। মৌসুমী বায়ু না আসলেও এমন বৃষ্টিতে মনে হতেই পারে ঢাকায় ঘোর বর্ষা নেমেছে।
রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় শাওন মাহমুদ নামে এক পথচারী বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীতে এমন জলাবদ্ধতা হয়। কিন্তু রাত থেকে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছি। বেশিরভাগ সময় পায়ে হেঁটে অফিসে যাই। আজ (মঙ্গলবার) সকালে জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা পাইনি। হাঁটুপানি মাড়িয়েই অফিসে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। যার মাশুল দিতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের। যারা আজ কাজে বের হয়েছেন তাদের প্রত্যেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন। কোথাও হাঁটু পানি, কোথায় গণপরিবহন সংকট সব মিলিয়ে ভোগান্তি যেন সাধারণ মানুষের।’
জলাবদ্ধতার মধ্যে যেসব মানুষ কর্মক্ষেত্রে যেতে বাধ্য হচ্ছেন এমন সুযোগ বুঝে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকছেন। হাতিরঝিল সংলগ্ন মধুবাগ এলাকার আব্দুর রহমান নামে এক অটো রিকশাচালক বলেন, ‘পানির মধ্যে গাড়ি নিয়ে গেলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় মাঝে মাঝে। পথচারীদের যেমন ভোগান্তি তেমনি আমরাও পড়েছি বিপাকে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে ভাড়া একটু বেশিই চাইছি। বিভিন্ন কাজে বের হয়ে মানুষ এর মধ্যে রিকশাও পাচ্ছে না।’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের উনিশ অঞ্চলের নদীবন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়। এছাড়া আগামী দুইদিনে আবহাওয়ার কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ফলে এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে, নেত্রকোনায় ৯৭ মিলিমিটার, রাজারহাটে ৬৮ মিলিমিটার, বরিশালে ৬৬ মিলিমিটার, ডিমলায় ৫৩ মিলিমিটার, সাতক্ষীরায় ৪৬ মিলিমিটার, সীতাকুণ্ডে ৪২ মিলিমিটার, ঢাকায় ৪৩ মিলিমিটার, সন্দ্বীপ ও মাদারীপুরে ২৪ মিলিমিটার।
এছাড়া সোমবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাঙামাটিতে; ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্র রেকর্ড করা হয় টাঙ্গাইলে; ২৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।