স্বদেশ ডেস্ক:
চট্টগ্রামে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন যুবকরা। তবে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছেন বয়স্করা। যুবকদের আক্রান্তের হার ৬১.৬৯ শতাংশ। অন্যদিকে বয়স্কদের মৃত্যুর হার ৭৯.৫৮ শতাংশ। যুবকদের আড্ডাবাজির কারণে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এক্ষেত্রে পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে। দেখতে হবে, বাড়ির বাইরে বের হলে সন্তানরা মাস্ক পরছে কিনা, স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানছে। সতর্ক না হলে পরিবারের অন্য সদস্যরা ঝুঁকিতে থাকবে। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চট্টগ্রামে শিশু-কিশোর (০-২০ বছর) আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৭৬ জন। শতাংশ হিসেবে ৯.৫। এই বয়সীরা মারা গেছে ৯ জন। মৃত্যুর হার ১.৮৭ শতাংশ।
যুবকরা (২১-৫০ বছর) সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। দেখা গেছে, এ পর্যন্ত যুবকরা ২৯ হাজার ৭০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এই হার ৬১.৬৯ শতাংশ। অন্য বয়সীর তুলনায় প্রায় তিনগুণ। মারা যাওয়ার দিক দিয়ে বয়স্কদের তুলনায় যুবকরা কম। এ পর্যন্ত যুবক বয়সীরা মারা গেছে ৮৯ জন। শতকরা হিসাবে ১৮.৫৩। বয়স্করা (৫১-৬০ বছরের উপরে) মারা যাচ্ছেন বেশি। তবে তাদের আক্রান্তের হার অনেক কম। এই বয়সীরা এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৬১ জন। শতাংশ হিসাবে ২৮.৭৯। মারা গেছেন ৩৮২ জন। মোট মৃত্যুর ৭৯.৫৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ১৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩২ হাজার ৬৭৭ জন আর মহিলা ১৫ হাজার ৪৬২ জন। মারা গেছেন
৪৮০ জন।
চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রধান উদ্যোক্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া আমাদের সময়কে বলেন, তরুণ ও যুবকদের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা কম। এ ছাড়া তরুণরা আড্ডাবাজিও করে বেশি। এর ফলে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমানে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। সেটা আরও বিপদ বাড়াচ্ছে তরুণদের ক্ষেত্রে। যে বন্ধুর সাথে আড্ডা দিচ্ছে তার উপসর্গ নেই। ফলে সহজে তরুণরা আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমানে তরুণদেরও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মৃত্যুহার কম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তরুণদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) বেশি। তিনি বলেন, করোনায় ৫০-ঊর্ধ্ব মানুষের মৃত্যুর হার বেশি। বয়স্কদের মধ্যে ইমিউনিটি কম। এ ছাড়া অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত থাকে। তাই বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি। এখন বয়স্কদের প্রতি বাড়তি যত্ন নিতে হবে। তাদের সামান্য জ্বর, কাশি কিংবা শরীরে দুর্বলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সবাই যদি মাস্ক পরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে যদি সচেতনতা না বাড়ে, তা হলে সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে মৃত্যুও লাগামহীনভাবে বাড়বে। এ ছাড়া অলিগলিতে আড্ডা ও মানুষের অযথা ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে। মাস্ক পরলে ৯০ শতাংশ সংক্রমণ কমবে।