শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন

দিনে কোটি টাকার শুটকি বিক্রি হয় কুয়াকাটায়

দিনে কোটি টাকার শুটকি বিক্রি হয় কুয়াকাটায়

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর মৎস বন্দরটি বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষা। বর্ষার মৌসুমে ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয় করা হলেও এই মৌসুমে চলছে শুটকির বেচা-কেনা। করোনার থাবায় মুখ থুবড়ে পড়েছিলো কুয়াকাটার শুটকি ব্যবসা। বছরের শুরুটাও হয়েছিলো ব্যবসায়ীদের ক্ষতি আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে।

গত কয়েকমাসে স্থানীয় ও মার্কেট ব্যবসায়ীরা কোটি টাকা লোকসান দিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিল। সংরক্ষণাগার ও যথাযথ প্রক্রিয়াজাতকরণের আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় করোনা মহামারিতে অবিক্রিত শুটকি নষ্ট হয়েছিল অন্তত ১০০ কোটি টাকার। হতাশার মাঝেও মৌসুমের শেষের দিকে এসে মহিপুর, নিজামপুর, সুধীরপুর ও গোড়াখালে দিনে কোটি টাকার শুটকি বিক্রি হয়, যা ব্যবসায়ীদের মাছে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শত শ্রমিক জালের উপর বিভিন্ন প্রজাতি মাছ শুকাচ্ছে। কেউ আবার ঝাড় দিয়ে কুড়িয়ে মাছ একত্র করছে। কেউবা শুটকি মাছ বস্তা (প্যাকেট) করছে। অতঃপর তা পাঠিয়ে দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে যুক্ত রয়েছেন। কোন কোন যায়গায় ছোট বাচ্চাদেরও এ কাজে বড়দের সহায়তা করতে দেখা গেছে।

প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে বেচা কেনা। এখানে সব শুটকি মাছ পাইকারী বিক্রি করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা হয় বলে এখানকার শুটকি মাছের সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। লইট্টা, চিংড়ি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় এগুলো বেশি বিক্রি হয়। এ ছাড়াও রুপচাদা, চ্যাপা, ভেটকি, ছুরি, লবস্টার, পাবদা, কোরাল, ভোলসহ নানা প্রজাতীর সামুদ্রিক মাছ বিক্রি করা হয় এখানে।

স্থানীয় বাজারেও যায় এ শুটকি। বিশেষ করে পর্যটন নগরী কুয়াকাটার শুটকি মার্কেটের বিভিন্ন দোকানীরা বেশি ক্রয় করেন। ট্রাকে করে চলে যায়- সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে। স্থানীয় শুটকি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম থেকে এজেন্সির মাধ্যমে চলে যায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে।

নিজামপুরের শুটকি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন (৪০) জানান, মৌসুম শুরুর দিকে আমার অনেক লোকসান হইছে। বর্তমানে আমি কিছুটা লাভের মুখে আছি। প্রতিদিন আমি ২লক্ষ টাকার শুটকি মাছ বিভিন্ন এলাকায় পাঠাই। গোড়াখালের শুটকি ব্যবসায়ী জহির নাজির বলেন, এবারে করোনার কারণে বেশিরভাগ শুটকি বিক্রি না হওয়ায় আমার ২০ লক্ষ টাকা লস হয়েছিল। তবে বর্তমানে আমি সপ্তায় ৭ লক্ষ টাকার মাছ সৈয়দপুরে পাঠাই।

কুয়াকাটার মা শুটকি বাজার দোকানের ব্যবসায়ী সোহেল মাহমুদ জানান, আমাদের এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নিজামপুর ও গোড়াখাল থেকেই বেশিরভাগ শুটকি ক্রয় করে আনি। এখন বেচাকেনা ভালোই হয় ফলে আমরা আস্তে আস্তে লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করছি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী জানান, নিরাপদ ও মানসম্পন্ন শুটকি উৎপাদনের জন্য কুয়াকাটার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তবে এ বছরের শুরুতে লোকসানের মুখে ছিল শুটকি ব্যবসায়ীরা। এখন একটু ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করছে মাত্র। আমরা চেষ্টা করছি যাতে তারা সহজ শর্তে ঋণ পায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877