শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

হলুদ বরণে সেজেছে মানিকগঞ্জের ফসলের মাঠ

হলুদ বরণে সেজেছে মানিকগঞ্জের ফসলের মাঠ

স্বদেশ ডেস্ক:

দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ, যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। দুই পাশে বিস্তৃত হলুদ ক্ষেতের মাঝে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি খেজুর-তাল গাছ। দেখে মনে হয় ‘যেন প্রকৃতি কন্যার গায়ে হলুদ’। প্রজাপতি, মৌমাছি, হলুদিয়া-নীলরঙা পাখি, পোকামাকড় থেকে শুরু করে অনেককেই দেখা যায় এই রাজ্যে! পরিবার পরিজন নিয়ে ছবি ফ্রেমবন্দী করতে সবাই যেন হুমড়ে পড়ে হলুদের ওপর।

সরিষা ক্ষেতের জন্য মানিকগঞ্জ খুবই পরিচিত একটি নাম। এ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষা আবাদ বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়েছে মওসুম মৌচাষীদের তৎপরতা। সরিষা যেমন দিচ্ছে তৈল, সাথে দিচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এছাড়া সরিষা চাষে রয়েছে বেশ লাভ। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির জন্য এর ফুল ও পাতা ঝরে তৈরী করা হয় জৈব সার। ফলে মানিকগঞ্জ জেলার অনেক কৃষকেরা এখন ধান ও অন্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষের দিকে ঝুকে পড়ছেন।

এদিকে সরষের হলুদ ফুলের রাজ্যে মাঠে মাঠে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৌচাষীরা। জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সাতক্ষিরা, জামালপুর, গাজীপুর, পাবনা, নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক মৌ-চাষীর দল মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরষে ফুল থেকে বিশেষ কায়দায় মধু সংগ্রহ করছেন। তাদের সংগৃহীত এই মধূ রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্রি করেন।

বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরষে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ চলে। এসময়ে গড়ে একেকজন মৌচাষী প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ মণ মধু আহরণ করতে পারেন। চলতি বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে মৌচাষীরা সরিষা ফুল থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টন মধু সংগ্রহ করবেন, যার পাইকারী মূল্য প্রায় অর্ধ কোটির মতো।

জামালপুর থেকে আসা মৌচাষী আকবর হোসেন জানান, ছয় বছর আগে তিনি দুই লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০টি বাক্স নিয়ে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাক্সের সংখ্যা দুই শতাধিক। সরিষা ফুল থেকে তিনি মাসে ২০ থেকে ২৫ মণ মধু সংগ্রহ করছেন। তিনি এই মধু ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় পাইকারী বিক্রি করেন।

নারায়ণগঞ্জের কুমুলী ইউনিয়নের মৌচাষী দলের প্রধান মো: জসিম উদ্দিন জানান, উন্নত প্রশিক্ষণ আর সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধু সংগ্রহের কাজে ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব। তিনি আরো জানান, দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রফতানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সহ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ উজ্জামান জানান, এ এলাকার জমি বেলে, দোআঁশ হওয়ায় পানি ধারণের ক্ষমতা কম। পানি ধারণ ক্ষমতার জন্য জমিতে জৈব সারের প্রয়োজন। ফলে সরিষার ফলন যেমন ভালো হয়, তেমনি জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়।

তিনি আরো বলেন, মানিকগঞ্জে এবার প্রায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সরকার বারি-১৪ জাতের বীজ সরবরাহ করায় এবার ফলন ভালো হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877